23 C
Dhaka
Monday, May 6, 2024
More

    কব্জির জোরে বাণিজ্যিক ভবন দখল করলেন ‘আরশাদ বাচ্চু’

    আরও পড়ুন

    নিজস্ব প্রতিবেদক ::

    প্রকাশ্য দিবালোকে পেশিশক্তির জোরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে চট্টগ্রামের গোল পাহাড় মোড়ের একটি ভবন দখল করে নেবার অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ নেতা আরশাদুল আলম বাচ্চুর বিরুদ্ধে। এই ভবনে গত পনের বছর ধরে এমএফসি নামের একটি রেস্টুরেন্ট ( বর্তমানে রাফসান কেয়ার) ব্যবসা করে আসছিলো। হঠাৎ করে বাচ্চুর লোকজন এসে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে চলে যেতে হুমকি দেন।

    পরবর্তীতে ভবনের সামনে লোকজন জড়ো করে  কলাপসিবল গেট স্থাপন করেন বাচ্চুর লোকজন। সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ দিয়ে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের ভবনে প্রবেশে বাধা দেন।

    প্রত্যক্ষদর্শিদের বর্ণনা অনুযায়ী, অস্ত্রসহ কিছু যুবক এসে চালু ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান রাফসান কেয়ার  বন্ধ করে দেন। এরা এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক জিএস আরশাদুল আলম  বাচ্চুর অনুসারী বলে পরিচিত।

    এবিষয়ে আরশাদুল আলম বাচ্চুর অনাধিকার প্রবেশ ও ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এমএফসি’র কর্ণদ্বার শরফুল হক।

    অভিযোগ পত্র অনুযায়ী, ২০২৬ সাল পর্যন্ত ভবনটির মালিকের সাথে ভাড়াটিয়া চুক্তির পাশাপাশি জমি বিক্রির বায়না চুক্তি রয়েছে। ২০১২ সালের ১৭ ই জানুয়ারি  বাড়িটির মালিকের সাথে  রেজিস্ট্রার্ড ভাড়াটিয়া চুক্তি ( দলিল-১১৫৬) সম্প্রদান করা হয়েছিলো।

    খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সারের ২২ শে সেপ্টেম্বর যুবলীগ নেতা আরশাদুল আলম বাচ্চু বাড়ি মালিকের সাথে একটি বায়না চুক্তি করেন। একটি চুক্তি বলবৎ থাকা অবস্থায় অন্য একটি চুক্তির আইনগত ভিত্তি নিয়েও প্রশ্ন করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া ২০২৪ সালের ১৯ শে সেপ্টেম্বর বাচ্চুর অনুকুল করা চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় চালু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে  পুরো ভবন দখল করে নেয়ার বিষয়টি ‘কজ্বির জোর’ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

    নথি অনুযায়ী এই ভবনটির বিষয়ে চট্টগ্রামের ২নং যুগ্ম জর্জ আদালতে মামলা ( মামলা নং -১০১/২৩) চলমান রয়েছে। ভাড়াটিয়া চুক্তির পাশাপাশি ভবন মালিকের সাথে ভূমি বিক্রির বায়না চুক্তিও রয়েছে ভাড়াটিয়া পক্ষের। এছাড়া নালিশি সম্পত্তির বিষয়ে আদালতে নিষেধাজ্ঞার শুনানি পেন্ডিং আছে।

    ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ব্যবসা চালু অবস্থায় ভবনের মুল ফটকে কলাপসিবল গেট নির্মাণ ও সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ করে আরশাদ বাচ্চু আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছেন। বায়না চুক্তি  দলিল যদি ভূমির মালিকানা নির্দেশ করে তাহলে ভবনটির মালিকানা তো ভাড়াটিয়ার।

    ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শরফুল হক বলেন, আমি অসুস্থতার জন্য ভারতে ছিলাম। এসময় দলবল নিয়ে কোন ধরনের আলাপ আলোচনা ছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে গেট নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ বাড়ি মালিকের সাথে আমার ভাড়াটিয়া চুক্তি রয়েছে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। এছাড়া ভূমিটি ক্রয় সংক্রান্ত বায়না দলিলও রয়েছে আমার সাথে। ‘

    এবিষয়ে ভুক্তভোগীর শ্যালক সাংবাদিক তানভীর হাসান ১৬ ই মার্চ চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। অনাধিকার প্রবেশ ও ব্যবসায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি অভিযোগ আনা হয়েছে আরশাদুল আলম বাচ্চুর বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিশ্চিত করে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সন্তোষ চাকমা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

    সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনটির কার্কপার্কিংএ বেলা কেটারিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান ইফতারি বিক্রি করছে। রাফসান কেয়ারের গ্রাহকদের জন্য নির্ধারিত কার পার্কিংএ অস্থায়ী রেস্টুরেন্ট গড়ে তুলেছেন আরশাদুল আলম বাচ্চু।

    - Advertisement -spot_img

    সবশেষ খবর