চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় আরও ৩ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করার প্রকল্প হাতে নিয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। নতুন এই প্রকল্পে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে দেশের শীর্ষ স্থানীয় এই শিল্প গ্রুপ। তবে ৩ হাজার মেগাওয়াটের অর্ধেক আসবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে। জীবাশ্ম জ্বালানি, যেমন–প্রস্তাবিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা বা গ্যাস দিয়েও বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা থাকবে। প্রকল্পটি ২০২৭ সালের মধ্যেই বাস্তবায়িত হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা ও পশ্চিম গণ্ডামারা এলাকার বঙ্গোপসাগর উপকূলের ৬’শ একর জায়গায় ২৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। এটি এস-এস পাওয়ার প্লান্ট নামে পরিচিত। তবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যৌথভাবে বিনিয়োগ করেছে এস-আলম গ্রুপ। বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে এস আলমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে চীনা প্রতিষ্ঠান সেপকো-থ্রি। এতে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ৭০ শতাংশের মালিকানা এস আলম গ্রুপের। অবশিষ্ট ৩০ শতাংশ চীনা প্রতিষ্ঠান সেপকো-থ্রির। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং যৌথভাবে এই ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। অপরদিকে সাত বছর পর ২০২৩ সালের ১৪ জানুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়া শুরু হয়।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ‘কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকা বা তাঁর আশে-পাশে কোথাও নতুন করে ১ হাজার মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে গেলে কমপক্ষে ৩ হাজার একর ভূমি প্রয়োজন। আর ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আরও বেশি জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে। অপরদিকে নির্মাণ কাজ শেষে বর্তমানে উৎপাদনে যাওয়া ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বাঁশখালীর গণ্ডামারা এলাকায় ৬০৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে এস আলম গ্রুপের।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের এক পরিচালক বলেন, ‘নতুন এই প্রকল্পটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। কোন কিছু চুড়ান্ত হয়নি এখনো। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাঁশখালীর প্রায় ৫ হাজার মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এ ছাড়া ১ লাখেরও বেশি মানুষের পরোক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে।’