গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জে দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব থেকে ১১ লক্ষ টাকা উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের গোলাবাড়িয়া গ্রামের সন্তোষ বিশ্বাসের ছেলে সঞ্জয় বিশ্বাস দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার পূর্বে তার স্ত্রী শীলা রানী বিশ্বাসের নামে রূপালী ব্যাংক লি. গোপালগঞ্জ কপোর্রেট শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব খুলেন। যার হিসাব নং— ১১৩১০১০০১৮২২৬।
প্রবাসী সঞ্জয় বিশ্বাস দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উক্ত হিসাব নম্বরে প্রতিমাসে রেমিটেন্সের টাকা পাঠাতেন। প্রতি মাসে রেমিটেন্সের টাকা জমা হওয়ার পরে শীলা রানীর নিজস্ব মোবাইলে ব্যাংক থেকে এসএমএস পাঠানো হতো। কিন্তু তিন মাস এসএমএস ঠিকমত পেলেও পরবর্তী মাসগুলোতে অজ্ঞাত কারণে এসএমএস আসা বন্ধ হয়ে যায়।
এবিষয়ে প্রিন্ট কপি চাইলে ব্যাংকের সহকারী মহাব্যস্থাপক (শাখা প্রধান) এস এম ওয়াহিদুজ্জামান রেজি: নং ৯৬১৮, নানা ওজুহাতে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। এ অবস্থায় হঠাৎ গত ১৪ জানুয়ারি তারিখে দুনীর্তি দমন কমিশন (দুদক) গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে শীলা রানীকে ফোন দিয়ে অফিসে তলব করে। সেখানে হাজির হলে দুদকের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার শীলা রানীর হিসাব নম্বরে অস্বাভাবিক লেনদেনের বিষয় জানতে চায়। তখন শীলা রানী জানায় আমার স্বামী দক্ষিণ কোরিয়া হতে প্রতিমাসে বাংলাদেশে টাকা পাঠায় এবং সেখান থেকে আমি সংসার খরচ বাবদ প্রয়োজনীয় টাকা উত্তোলন করি। এছাড়া আর কিছুই জানি না।
পরবর্তীতে রুপালী ব্যাংকের গোপালগঞ্জ কর্পোরেট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক এস এম ওয়াহিদুজ্জামানের কাছে লেনদেনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই শাখার সিনিয়র অফিসার কৌশিক ভক্ত (রেজি: নং—১৩৪২২) বিভিন্ন উপায়ে চেক, ট্রান্সফার এবং আরটিজিএস এর মাধ্যমে অত্র শাখার বিভিন্ন গ্রাহকের ৯টি সঞ্চয়ী হিসাব থেকে ৬০ লক্ষ ১ হাজার টাকা বা তারও বেশি সুকৌশলে অত্র কার্যালয়ের অফিসার মোছা: মুক্তি খাতুন (রেজি: নং— ১৬৯৫৮) এর আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন হিসাব নম্বরে টাকা স্থানান্তর করেন বলে জানায়।
তিনি আরও বলেন, কৌশিক ভক্তসহ জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জন্য ব্যাংক কতৃর্পক্ষ গত ২৯ আগষ্ট ২০২৩ তারিখে একটি সাধারণ ডায়েরী করেছে। সাধারণ ডায়েরী নং— ১৫২১। বিভিন্ন সময়ে শীলা রানীর হিসাব নম্বর থেকে ১১ লক্ষ টাকার উত্তোলনের বিষয়টি কৌশিক ভক্তের মুঠো ফোনে জানতে চাইলে “দিদি ঠিক হয়ে যাবে, আমরা ঠিক করে দেব” বলে সান্তনা দিতে থাকে। কিন্তু আজ অবধি ৭ মাস পার হলেও রূপালী ব্যাংক গোপালগঞ্জ কপোর্রেট শাখা টাকা উদ্ধারের ব্যাপারে কোন সমাধান দিতে পারেনি।
আরেক ভুক্তভোগী কৃষ্ণ পান্ডে বলেন, আমার ব্যাংক হিসাবে ২০ হাজার টাকা ছিলো। কিন্তু টাকা উত্তোলনের সময় ২০ হাজারের স্থানে ২ লক্ষ টাকা লিখে টাকা উত্তোলণ করে আমাকে শুধুমাত্র ১৯ হাজার টাকা দেয়। তখন টাকা পাচারের অপরাধের বিষয়টি ম্যানেজারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন; বিষয়টি নিয়ে আমরা অডিট করেছি খুব দ্রুতই সমাধান হবে।
এ অবস্থায় ভুক্তভোগী শীলা রানী বিশ্বাস, কৃষ্ণ পান্ডে ও সোনামনি সরকার বলেন; আমরা দোষীদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি প্রদানের ও বেহাত হওয়া টাকা ফেরৎ পাওয়ার ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এই বাংলা/এমপি