জলিলুর রহমান জনি, সিরাজগঞ্জ:
ভাদ্রের শুরুতে অব্যাহত বর্ষণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শাকসবজি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে পণ্যের দামে ব্যাপক ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। সিরাজগঞ্জসহ আশপাশের বাজারগুলোতে গত এক সপ্তাহে অধিকাংশ সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা এখন বড় ধরনের চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজিপ্রতি দেশি শসা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা এবং পেঁপে ৫০ টাকা দরে। লাউ প্রতি ৬০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম, এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ১৬০ টাকা কেজি, বর্তমানে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির পাশাপাশি অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও ঊর্ধ্বমুখী। বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা। দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফার্মের ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়।
বাজারের বিক্রেতাদের দাবি, অব্যাহত বৃষ্টির কারণে মাঠে থাকা সবজির অনেকটাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে সরবরাহ কমে গেছে এবং পাইকারি দামে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটেছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে সঠিক মনিটরিং না থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে।
সিরাজগঞ্জের বাগবাটি বাজারের ব্যবসায়ী কাওসার আলী বলেন, “এখন প্রায় সব সবজির দামই ৬০ টাকার উপরে। আমরা বেশি দামে কিনে আনছি, তাই কম দামে বিক্রি করার সুযোগ নেই।”
অন্যদিকে এক গৃহিণী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সাতদিন পর বাজারে এসে দেখি সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। পরিবারের খরচ সামলানোই কঠিন হয়ে পড়েছে।”
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এই অস্থিরতা কাটাতে বাজার মনিটরিং জোরদার করা, কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া এবং সরবরাহ চেইন ঠিক রাখতে হবে। আবহাওয়া অনুকূলে এলে দাম স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।