27 C
Dhaka
Monday, May 6, 2024
More

    বিলুপ্তির পথে কেশবপুরের মৃৎশিল্প পালরা পেশা নিয়ে চিন্তিত 

    আরও পড়ুন

    মৃৎশিল্প
    বিলুপ্তির পথে কেশবপুরের মৃৎশিল্প

    হারুনার রশীদ বুলবুল, কেশবপুর(যশোর):কেশবপুরে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র এখন বিলুপ্তির পথে।  আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন কমে যাচ্ছে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র। যে কারণে সংসারের ঘানি টানতে হিমশিম খাচ্ছেন মৃৎশিল্পের পরিবারের লোকজন। মৃৎশিল্পের জন্য এক সময় কেশবপুর উপজেলার সুনাম ছিল।

    কিন্তু নানা প্রতিকূলতায় বর্তমানে কেশবপুরে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন গ্রামের পালবাড়িতে মৃৎশিল্প বিপন্ন হতে না হতেই ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে এই শিল্প।তাই বংশানুক্রমে গড়ে ওঠা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত কুমার বা পালরা এ পেশা নিয়ে বেশ চিন্তিত।

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,কেশবপুরে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন গ্রামের পালবাড়িসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মৃৎশিল্প ছিল। মৃৎশিল্পীরা মাটির হাঁড়ি-পাতিল,বাসন-কোসন, ঢাকনা, কলসি, ছোট বাচ্চাদের খেলনাসামগ্রী, পেয়ালাসহ প্রভৃতি তৈরি করত।

    তাঁদের তৈরি পুতুল যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সরবরাহ করা হতো। বর্তমানে নানা প্রতিকূলতা ও অভাব অনটনের কারণে যশোরের কেশবপুর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা,আলতাপোল,কন্দপপুর,বুড়িহাটি,বরণডালী,হাড়িঘোপ,ভেরচী,পাঁজিয়া,মঙ্গলকোটসহ বিভিন্ন গ্রামের পালবাড়ির মৃৎশিল্পীরা তাঁদের ঐতিহ্যবাহী বাপ-দাদার আদি পেশা ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

    সোমবার ৪ ডিসেম্বর দুপুরে সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ঘুরে দেখা গেছে এ উপজেলায় প্রায় দু শতাধিক মৃৎশিল্পী পরিবার রয়েছে। পাড়ার সবাই সনাতন ধর্মাবলম্বী। বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের রনজিৎ পাল,জয়দেব পাল,গৌতম পাল,দেবু নাথ পাল,রতন পাল,আলতাপোল গ্রামের,স্বপন পাল,অধির পাল,এ প্রতিনিধি কে জানান,কেউ প্রতিমা আবার কেউ ছোট হাঁড়ি তৈরি করেন। তাদের শিক্ষা ও জীবনযাত্রার মান অনুন্নত।

    এখন মাত্র কয়েকটি পরিবারের কারিগরেরা বাপ-দাদার আদি পেশা কোনোমতে আঁকড়ে ধরে আছেন।তাঁদের পেশার দৈন্যদশার সঙ্গে সঙ্গে সংসার জীবনে বিরাট বিপর্যয় নেমে এসেছে। মাটির তৈরি জিনিসপত্রের স্থান দখল করে নিয়েছে অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের জিনিসপত্র। অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের জিনিসপত্রের দাম বেশি হলেও অধিক টেকসই হয়।

    এজন্য সেটি বাজার দখল করে নিয়েছে।মাটির তৈরি জিনিসপত্র আগুনে পোড়ানোর কাজে ব্যস্ত দুই মৃৎশিল্পী মাটির তৈরি জিনিসপত্র আগুনে পোড়ানোর কাজে ব্যস্ত দুই মৃৎশিল্পী।

    উপজেলার সুফলাকাটি ইউনিয়নের হাড়িয়াঘোপ গ্রামের নারাণ পাল এ প্রতিনিধি কে বলেন,আমরা মাটি দিয়ে যেসব জিনিস বানায়,সেগুলো আর আগের মত বেচঁতে পারিনা। কি করব? অন্য কাম (কাজ) করতে পারিনা। তাইবালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃৎশিল্পের আঁকড়ে ধরেই আছি।

    এখন আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। সেডা দেখার কেউ নেই।যার কারণে সংসারের ঘানি টানতে হিমশিম খাচ্ছেন এসব পরিবারের লোকজন। ২০/২৫ বছর আগে মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র কেশবপুর বাজার সহ বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম ও বাজারে কদর ছিল বেশ।

    বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃৎশিল্পের কারিগর কার্তিক পাল বলেন,আমি এখন মৃত শিল্প তৈরির কাজ ছেড়ে দিয়েছে কিন্তু, ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি জিনিসপত্রের দাম কম থাকায় এখন ধীরে ধীরে এই শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে।ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিলুপ্তির পথে দেখা দিয়েছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন কমে যাচ্ছে মাটির তৈরির বিভিন্ন জিনিসপত্র। কিন্তু খেজুরের রস ও গুড়ের জন্য এ উপজেলায় মাটির তৈরি ভাড়ের ব্যাপক কদর রয়েছে। এই বিষয়ে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তুহিন হোসেন বলেন বিলুপ্ত প্রায় এই শিল্প কে বাঁচাতে সব ধরনের সহযোগিতা আমার পক্ষ থেকে পাবে। কেশবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুদ্ধ হত বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম বলেন, তারা আমার কাছে আসলে আমি তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবো এবং তাদের পাশে আমি থাকবো বলে আশ্বাস দেন

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisement -spot_img

    সবশেষ খবর