নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় নিলয় মোল্যা (১৪) নামে এক মাদরাসাছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিলয়ের সঙ্গে থাকা তামিম খান নামে আরেক কিশোর আহত হয়েছে।
শুক্রবার (১ মার্চ) দিনগত রাতে উপজেলার খাশিয়াল ইউনিয়নের তালবাড়িয়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নড়াগাতি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিলয় মোল্লা কালিয়া উপজেলার টোনা গ্রামের সাবেক পুলিশ সদস্য সুলতান আহমেদ মোল্যার ছেলে এবং স্থানীয় টোনা দাখিল মাদরাসার অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নিলয় ও তামিমসহ এলাকার কয়েকজন তালবাড়িয়া গ্রামে ওয়াজ শুনে বাড়ি ফেরার পথে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল তাদের পথ আটকায়। তারা নিলয় ও তামিমকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিলয়কে মৃত ঘোষণা করেন।
আহত তামিম জানান, দিন পনের আগে তাদের গ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক মেয়ে শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করে শাকিল খান নামে এক তরুণ। নিলয় মোল্যা এর প্রতিবাদ করে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাকিলকে চড় দেন নিলয়। পরে স্থানীয়রা ঘটনাটি মীমাংসা করে দেন। ওই ঘটনার জের ধরে আজকে মাহফিল থেকে ফেরার পথে শাকিল বিড়ি খাওয়ার কথা বলে আমাকে ও নিলয়কে ডেকে নিয়ে রামদা, সেভেন গিয়ার দিয়ে আঘাত করে। আমরা বাঁচার জন্য চিৎকার চেঁচামেচি করলে মাহফিলের লোকজন এসে আমাদের উদ্ধার করে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, খাশিয়াল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেজ্জাক খন্দকার বলেন, তারা মাহফিল থেকে ফেরার পথে জানতে পারেন, ব্রাহ্মণপাটনা গ্রামের কামরুল খানের ছেলে শাকিল খানের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন লোক দুটি ছেলেকে কুপিয়ে পালিয়েছে। পরে তাদের উদ্ধার করে আমরা কালিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে ডাক্তার নিলয়কে মৃত ঘোষণা করে।
কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক পার্থ প্রতিম বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই নিলয়ের মৃত্যু হয়েছিল। তামিমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শাকিল খান বা তার পরিবারের কারো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নড়াগাতি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিলয়ের মরদেহ ময়নাতদন্ত জন্য সকালে (শনিবার) নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। ঘটনার সাথে জড়িতদের সন্ধান করা হচ্ছে।
এদিকে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় শিশু অপহরণের চেষ্টার সময় আকিদুল শেখ (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে হাতেনাতে আটক করেছে জনতা। পরে তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। শুক্রবার উপজেলার গোপিনাথপুর এলাকায় ওই ব্যক্তিকে আটক করে স্থানীয়রা।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশের হাতে আটক হওয়া আকিদুল শেখ ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানার নোয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম সেলিম শেখ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আকিদুল শেখ নামে ওই ব্যক্তি লোহাগড়া উপজেলার গোপিনাথপুর গ্ৰামের তবিবর শেখের ভাড়াটিয়া তারিকুল ইসলামের মেয়ে আছিয়া খানম (৫)-কে চেতনানাশক মুখে দিয়ে অপহরণের চেষ্টার সময় স্থানীয়রা দেখে ফেলেন। পরে দৌড়ে পালানোর সময় জনগণ তাকে ধাওয়া করে আটক করে। অতঃপর তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, শিশু অপহরনের চেষ্টার সময় স্থানীয় জনতা এক ব্যক্তিকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে। আমরা ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই বাংলা/এমপি