25.2 C
Dhaka
Friday, August 22, 2025

লিড নিউজ

প্রমাণিত হলো ব্রাক ডেইরির কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা

আরও পড়ুন

::: অপু ইব্রাহিম :::

ডেইরি এন্ড ফুড কারখানায়  প্যাকেজিংএ  ব্যবহৃত হয় বিশেষ এক ধরনের এসেপট্রিক প্যাকেট। সাধারণত দুধ কিংবা জুসের মতো পণ্য  প্যাকেকজাত করতে বিশেষ ধরনের কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে দেশের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান সাধারণ পেপার ঘোষণা দিয়েই আমদানি করে আসছে দুধ বা জুসের প্যাকেটের মতো উচ্চ শুল্কের ফোল্ডেড এসেপট্রিক পেপার বক্স । বিদেশ থেকে ছয় লেয়ারের আয়তকার ফোল্ড করা বক্স দেশে এনে তৈরি করা হয়  দুধ কিংবা জুসের প্যাকেট।

সম্প্রতি গাজীপুরের ব্রাক ডেইরি এন্ড ফুড প্রজেক্ট  নামের একটি প্রতিষ্ঠান মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে থাইল্যান্ড থেকে এসেপট্রিক প্যাক আমদানির মাধ্যমে  ২১ লাখ ৯৪ হাজার নয়শ সাতচল্লিশ টাকা শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করে। গেল বছরের ডিসেম্বর মাসে মিথ্যা এইচএস কোড ব্যবহার করে জুস কারখানার এসব কাঁচামাল ( অসম্পূর্ণ প্যাকেট) আমদানির বিষয়টি অবশেষে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।  চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আনা এসব কাঁচামালের কনটেইনার আটকে দেবার চার মাস পর  রবিবার (৭ ই মে) ব্রাক ডেইরি এন্ড ফুডের বিরুদ্ধে  চুয়াল্লিশ লক্ষ টাকা অর্থদন্ডের নির্দেশনা জারি করেছে।

কাস্টমস আইন ১৯৬৯ এর ৩২ ধারা মোতাবেক মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি করার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায়  ব্রাক ডেইরি এন্ড ফুড প্রজেক্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে   কাস্টমস কমিশনার ফয়জুর রহমান স্বাক্ষরিত অফিসে আদেশে। কাস্টমস এ্যাক্টের ১৫৬ (১)এর অনুচ্ছেদ ১৪ অনুযায়ী  পন্য চালানটি রাস্ট্রের অনুকুলে বাজেয়াপ্তকরনসহ আমদানিকারককে চুয়াল্লিশ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। কাস্টমস আইনের ১৮১ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির দায়ে প্রতিষ্ঠানটিকে  এক লক্ষ টাকা বিমোচন জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।

কাস্টমসের নথি অনুযায়ী আমদানি করা চালানটির প্রকৃত  এইচএস কোড ৪৮১৯ ক্যাটাগরির হলেও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ব্রাক ডেইরি এন্ড ফুড প্রজেক্টের মনোনীত সিএন্ডএফ মেসার্স আমান এন্টারপ্রাইজ ৪৮১১.৪৯.১০ ( পেপার বা পেপারবোর্ড ) এইচএস কোড দেখিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে পন্য ছাড় করার চেষ্টা চালায়। চালানটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় দেখা যায় সাধারণ পেপার ঘোষণা দেয়া হলেও ব্রাক ডেইরির আমদানি করা এসব ফোল্ডেড পেপার মুলত জুসের প্যাকেট তৈরির ছয় লেয়ারের প্রিন্টেড পেপার। যার নির্ধারিত শুল্ক সাধারন পেপারের দ্বিগুণ।

গত ১২ই জানুয়ারী  সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান  মেসার্স আমান এন্টারপ্রাইজের জমা দেয়া বিল অব এন্ট্রি অনুযায়ী এসব আমদানিকৃত  পণ্যের শুল্কায়ন করা হয়েছিলো একুশ লাখ আট হাজার ৫৭ টাকা তেত্রিশ পয়সা (২১,০৮,০৫৭.৩৩) । ছয় লেয়ারের ফোল্ডেড শ্রেণীর এসব পেপারের (এইচএস কোড ৪৮১৯) প্রকৃত শুল্ক হবার কথা ষাট লক্ষ উনচল্লিশ হাজার তিনশ পঁয়ষট্টি টাকা ৬২ পয়সা (৬০,৩৯,৩৬৫.৬২)। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আমদানি করা পণ্যের শুল্ক তিনগুন কমিয়ে ছাড় করার অপচেষ্টা প্রমাণিত হবার পর প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অর্থদণ্ডের এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

কাস্টমস কোড অনুযায়ী পণ্যের কার্টুন, বক্স, কেইস, ব্যাগসহ অন্যান্য প্যাকিং কনটেইনারের পেপার, পেপার বোর্ড, সেলুলার ওয়াডিং, সকল প্রকার সেলুলার ওয়াডিং, সেলুলার ফাইভার, লেটার ট্রে ইত্যাদি পণ্য এইচএস কোড ৪৮. ১৯ এর শ্রেণীভুক্ত। বিশেষ এই কার্টুন বক্স সাধারন পেপারের (৪৮.১১) শ্রেণীভুক্ত নয়। এই চালানের ক্ষেত্রে ফোল্ডেড পেপার বলে ( ইউেইচটি মিল্ক ড্রিংক্স) অসম্পূর্ণ  এসেপট্রিক্স  আয়তক্ষেত্রকার  বক্স আমদানি করে সুক্ষ্ম জালিয়াতি করা হয়েছে।

এইবাংলা/ হিমেল

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর