33 C
Dhaka
Sunday, May 19, 2024
More

    তাপমাত্রা কমার সুখবর নেই

    আরও পড়ুন

    রাহাত আহমেদ :::

    সারাদেশে তীব্র গরমের কারণে জনজীবন দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দেশের কোন কোন স্থানে বৃস্টির দেখা মিললেও তাপমাত্রা কমার লক্ষ্মণ নেই। সত্তর বছরের রেকর্ড ভেঙেছে তাপমাত্রা। বাংলাদেশে চলতি মৌসুমে গত কয়েকদিন ধরে টানা তীব্র গরমের মধ্যে  চতুর্থ দফায় হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। 

    আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এখন প্রায় ৪৫টির মতো জেলার ওপর দিয়ে এই দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন মাত্রায়।সংস্থাটি বলছে, দেশের ওপর দিয়ে চলমান মৃদু থেকে তীব্র ধরণের তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে এবং এ সময় জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়বে।

    চুয়াডাঙ্গায় ১৬ দি‌ন ধ‌রে অব্যাহত র‌য়ে‌ছে তীব্র থে‌কে অতি তীব্র তাপমাত্রা। বাতাসে বইছে আগুনের হল্কা। আজ শনিবার এ জেলায় স‌র্বোচ্চ তাপমাত্র রেকর্ড করা হ‌য়ে‌ছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেল‌সিয়াস।

    চলতি এ মৌসুমের শুরু থেকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়ে আসছে এই জেলায়। একটানা এই তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপ প্রবাহে হাসপাতালে বেড়েই চলেছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

    বৈশাখের চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। নিজের সর্বোচ্চ শক্তিমত্তা জানান দিচ্ছে সূর্য। শহর-গ্রাম, পথ-ঘাট, সড়ক-মহাসড়ক সবখানেই সূর্যের খরতাপ! এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানের তাপমাত্রা কমার আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে আজ নয়, আগামী পরশুদিন অর্থাৎ ২৯ এপ্রিল সারা দেশে দিনের তাপামাত্রা কমে যেতে পারে। যা রাতেও অপরিবর্তিত থাকবে। তবে জলীয়বাষ্পের কারণে জনমনে অস্বস্তি বিরাজ করলেও আগামী ৫ দিনের শেষের দিকে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

    শনিবার (২৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদের দেওয়া আবহাওয়ার পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

    বিশেষজ্ঞদের মতে জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে বেড়েছে তাপমাত্রা। এপ্রিল মাসে সাধারণত আমাদের দেশে প্রচণ্ড গরম হয়। আবার এক সময় বজ্রঝড় হয়ে সেই গরম প্রশমিত হয়। তারপর আবহাওয়া একসময় আবার গরম হয়। এভাবে তাপ ও ঝড়বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে চলে এ মাস। কিন্তু দিন দিন এপ্রিল মাসে তাপ্রবাহ বাড়ছে আর কমছে বজ্রঝড়ের সংখ্যা।চলতি এপ্রিল মাসে গত ৭৬ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে তাপপ্রবাহ ছিল। এ মাসের ১ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। আজ ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত তা চলছে।

    আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. উমর ফারুক বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখেছি, এবারের মতো তাপপ্রবাহ টানা আগে হয়নি। এবার ৭৬ বছরের রেকর্ড এবার ভেঙে গেল।’

    এই তাপপ্রবাহের মাসে বজ্রঝড় বা কালবৈশাখীর সংখ্যা গেছে কমে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি ১৯৮১ থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাসের উপাত্ত তুলে ধরেছেন তাঁর গবেষণায়। এই ৪৩ বছরে এপ্রিল মাসে ৩৬৫টি বড় বজ্রঝড় হয়। সবচেয়ে বেশি ঝড় হয়েছিল ১৯৯৭ সালের এপ্রিল মাসে, ১৪টি। আর ১৯৯৯ এবং ২০০৯ সালে সবচেয়ে কম চারটি করে ঝড় হয় এপ্রিলে। গত বছরের এপ্রিলে বজ্রঝড় হয়েছিল সাতটি। ২০২২ এবং ২০২১ সালে হয় যথাক্রমে নয়টি ও আটটি। আর এ বছর মাত্র একটি।

    তাপ প্রবাহে অতিষ্ট হয়ে ওঠেন প্রতিবেশী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, কেরালাসহ বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ। এদিন দেশটিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

    আরেক প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে পারদ ওঠে ৩৯ ডিগ্রিতে। শুক্রবার দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তানে ৩২, শ্রীলঙ্কায় ৩০ আর মালদ্বীপে ছিল ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

    অন্যদিকে, থাইল্যান্ডে ৩৮ ডিগ্রি আর সিঙ্গাপুরে রেকর্ড করা হয় ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ায় ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। তবে গতকাল শুক্রবার ব্যতিক্রম ছিল আফগানিস্তান। এদিন দেশটিতে তাপমাত্রা ছিল মাত্র ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisement -spot_img

    সবশেষ খবর