কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিল কর্মসূচি শুরুর কয়েক দিনের মধ্যেই খাবারের নিম্নমান, রুটিন অনুযায়ী খাবার সরবরাহ না করা এবং সরবরাহকারীর সমন্বয়হীনতার অভিযোগ উঠেছে। রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার বেশ কিছু বিদ্যালয়ে সরেজমিন খোঁজ নিয়ে এসব অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। এতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
সরকার স্কুলগামী শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত ও উপস্থিতি বাড়াতে সপ্তাহে পাঁচ দিন মিড-ডে মিল চালুর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কুড়িগ্রামে কর্মসূচি শুরুর সপ্তাহ না পার হতেই কয়েকটি ক্লাস্টারে খাবারই দেয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইসল্যান্ড ট্রেডিং। কোথাও নিম্নমানের রুটি, পচা বা কাঁচা কলা, আবার কোথাও নির্ধারিত রুটিন অনুযায়ী খাবার না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রৌমারী উপজেলার শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, উপজেলায় ১১৪টি বিদ্যালয়ের ১৮ হাজার ৯৯৮ জন শিক্ষার্থী সপ্তাহে ৫ দিন রুটি, ডিম, দুধ, বিস্কুট ও মৌসুমি ফল পাওয়ার কথা। কিন্তু সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান শিক্ষা বিভাগকে আনুষ্ঠানিকভাবে না জানিয়ে খাবার বিতরণ শুরু করে।
বিদ্যালয়গুলোর অভিযোগ:
-
যাদুরচর নতুন গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছাঃ মনোয়ারা বেগম জানান—রুটি ও কলা কম দেওয়া হয়েছে, ১৯ নভেম্বর শুধু রুটি আসে, এরপর আর খাবার পায়নি শিক্ষার্থীরা।
-
চর বারবান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ লুৎফর হক বলেন—১৮ নভেম্বর ৭০ জনের জন্য ডিম-রুটি পাওয়া গেলেও পরদিন শুধু রুটি আসে; তারপর থেকে আর কিছুই সরবরাহ হয়নি।
-
মঙ্গলবার আবারও কাঁচা ও খাওয়ার অযোগ্য কলা দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মঈনুল হোসেন জানান, প্রতিষ্ঠানটি মৌখিকভাবে জানিয়ে খাবার বিতরণ শুরু করে। কার্যাদেশের কপি পর্যন্ত শিক্ষা বিভাগ পায়নি। অভিযোগের পর তারা সরবরাহ স্থগিত করে ১ ডিসেম্বর থেকে মানসম্মত খাবার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানান তিনি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইসল্যান্ড ট্রেডিং–এর প্রতিনিধি মোঃ রায়হান বলেন, “খুব অল্প সময়ে কার্যাদেশ পাওয়ায় কিছু অসংগতি হয়েছে। ১ ডিসেম্বর থেকে নিয়মমতো সম্পূর্ণ মানসম্মত খাবার দেওয়া হবে।”
কুড়িগ্রামের জেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার রায় চৌধুরী বলেন, “রৌমারী–রাজিবপুরে সরবরাহে অনিয়ম আমাদের নজরে এসেছে। ঠিকাদার কোনো চুক্তিপত্রও দেয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
দেশের ৬২ জেলার ১৫০টি উপজেলায় মিড-ডে মিল চালু হচ্ছে। কুড়িগ্রামের ৭ উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ২৮ হাজার শিক্ষার্থী এ কর্মসূচির আওতায় রয়েছে।
এই বাংলা/এমএস
টপিক
