আল আমিন,নাটোর প্রতিনিধি:-
চিকিৎসা বিজ্ঞানে কোন পড়ালেখা বা সনদ না থাকলেও প্রসূতী, নবজাতক,মেডিসিন সহ সব রোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন তিনি। অপরিচ্ছন্ন ঝুপড়ি কক্ষে বসে দিব্যি দিচ্ছেন চিকিৎসা। রুমের পাশে অপেক্ষমান রয়েছেন নারী, শিশুসহ বেশ ক’জন রোগী। যাদের রোগ নিরাময়ের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন তাদেরও চিকিৎসা দিচ্ছেন তিনি অনায়াসে। সামনে বসিয়েছেন ফার্মেসী। মালিকানা দাবী করলেও নিজের নামে কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। এমন হাতুড়ে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় প্রায়শ রোগীদের সমস্যা হলেও তিনি রয়েছেন বহাল তবিয়তে।”
নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসদরের চাঁচকৈড় দুধবাজারে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে হয়রত আলী (৪৮) নামের যুবক ৫ বছর ধরে দিচ্ছেন এই অপ—চিকিৎসা।
চাঁচকৈড় বাজারপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ওই কথিত চিকিৎসকের অপ—চিকৎসার তথ্য সংগ্রহে গেলে তিনি সংবাদিকদের সাথে অশোভন আচরন করে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। তার স্বজন পরিচয়দানকারী বেসরকারী টেলিভিশন সাংবাদিক দাবী করা একজনকে দিয়ে মুঠোফোনে গালমন্দও করেন।
চাঁচকৈড় খামারনাচকৈড় মহল্লার সামসুল হক জানান, হযরত আলী চাঁচকৈড় বাজারে এক ফার্মেসী দোকানে বেশ ক’বছর কর্মচারী ছিলেন। মালিকের মৃত্যুর পর সেই কর্মচারী এখন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সেজেছেন। তাঁর বড়ভাই ড্রাইভার লাভলু হযরতের ভুল চিকিৎসায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মৃত্যু শয্যায়। তিনি ওই ভুয়া চিকিৎসকের শাস্তি দাবী করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চিকিৎসা নিতে আসা গর্ভবতি মহিলার স্বজন জানান, ডাক্তার না হলেও হযরত আলীর চিকিৎসায় অনেকে সুস্থ্য হয়েছেন। এমনটা শুনেই তারা চিকিৎসা নিতে এসেছেন।
অভিযুক্ত কথিত চিকিৎসক হযরত আলী জানান, তিনি চিকিৎসা দিতে পারেন কি না, চিকিৎসা সনদ আছে কিনা সেটা সাংবাদিকরা জানার অধিকার রাখেন না। আর তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম জানান, হযরত আলী চিকিৎসক কিংবা ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশান) দিতে পারেন কি না এ বিষয়ে তাঁর কাগজপত্র যাচাই শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা সিভিল সার্জন মশিউর রহমান জানান, হযরত আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাঁর অপ—চিকিৎসার শিকার ওই রোগীর স্বজনদের লিখিত অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেন তিনি।
এইবাংলা /হিমেল