25 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

নাটোরের লালপুরে বাবা-মেয়ের একসঙ্গে এস.এস.পরীক্ষায় অংশগ্রহণ

আরও পড়ুন

::: আল আমিন,নাটোর প্রতিনিধি:::

শিক্ষার জন্য বয়স কোন বাধা নয়, চাই মনের ইচ্ছা। আর এই ইচ্ছা শক্তি যার মধ্যে আছে তাকে দমায় কে? তাই নিজের ইচ্ছাকে বাস্তবে রুপ দিতে এবছর অনুষ্ঠিত এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় নাটোরের লালপুরে বাবা ও মেয়ে একসাথে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করছে।

উপজেলার রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখা থেকে এসএসসি (সমমান) পরীক্ষায় অংশগ্রহন করছে বাবা আব্দুল হান্নান (৪০) ওরোফে মেয়র হান্নান এবং উপজেলার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছে মেয়ে হালিমা খাতুন (১৫)। আব্দুল হান্নান উপজেলার গোপালপুর পৌরসভার নারায়ণপুর মহল্লার মৃত আলহাজ্ব লাল মিয়ার ছোট ছেলে।

আব্দুল হান্নান জানান, ১৯৯৮ সালে তিনি নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হন। এর পর আর লেখা পড়া করা হয় নি, নেমে পড়েন সংসার জীবনে। পৈতৃক সূত্রে গোপালপুর রেলগেট এলাকায় প্রাপ্ত একটা দোকানে চায়ের ব্যবসা শুরু করেন। সেই দোকানের আয় ও জমিজমা চাষ করে বেশ সুখেই চলে জীবন।

সংসার জীবনে স্ত্রী, মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে তার। এক ছেলে আবু হানিফ নিরব (১১) নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুলের ৫ ম শ্রণীর শিক্ষার্থী ও ছোট ছেলে রমজান মিয়ার বয়স মাত্র চার বছর। কিন্তু ছাত্র জীবনের সেই পরাজয়ের গ্লানি মুছে ফেলার প্রবল ইচ্ছা দিনে দিনে তার মধ্যে প্রবল থেকে প্রবলতর হতে থাকে। এসএসসি পাশ করতেই হবে এমন পণ করে বসে সে। আর এই জন্য ২০২১ সালে সে উপজেলার রুইগাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম (ভোকেশনাল) শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে এবছর এসএসসি (সমমান) পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।

আব্দুল হান্নান ২০২১ সালে গোপালপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে সতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনও করেন। অবশ্য নির্বচনে তিনি জিততে পারেননি, তবে সেই থেকে আব্দুল হান্নানের পরিচিতি  মেয়র হান্নান হিসেবে। শুধু তাই নয় আব্দুল হান্নান চায়ের দোকানদারি করলেও তার প্রতিভার কমতি নেই।

সাংস্কৃতি মনা এ মানুষটি বেশ কিছু গান, কবিতা ও নাটকও লিখেছেন। তার মেয়ে হালিমা জানান, তার বাবার মেধা আছে এবং ইচ্ছা শক্তি আছে আর তাই এ বয়সেও তার লেখাপড়া করার প্রবল ইচ্ছাটার কারনেই তিনি এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করছেন।

বাবা-মেয়ে একসাথে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন এতে তার কেমন লাগছে এমন প্রশ্নের জবাবে হালিমা জানান, আমার খুব ভালো লাগছে।বাবাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি।  আমার বাবাকে দেখে অন্যরা পড়াশুনায় অনুপ্রানিত হবে বলে আমি মনেকরি। বাবা – মেয়ে যেন একসাথে ভালো ফলাফল করতে পারে এ জন্য তারা সবার কাছে দোয়া চেয়েছে তারা।

এইবাংলা /তুহিন

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর