Become a member

Get the best offers and updates relating to Liberty Case News.

― Advertisement ―

spot_img

মা ইলিশ রক্ষা অভিযান কতটা সফল?

বাংলাদেশে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান চললেও মাঠপর্যায়ের চিত্র বলছে, অবৈধভাবে ইলিশ ধরার প্রবণতা থামেনি। বরিশালের তিনটি নদী ঘুরে দেখা গেছে, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলেরা...
Homeদেশগ্রামকুষ্টিয়ায় জাতীয় পর্যায়ে লালনের ১৩৫ তম তিরোধান অনুষ্ঠান শুরু

কুষ্টিয়ায় জাতীয় পর্যায়ে লালনের ১৩৫ তম তিরোধান অনুষ্ঠান শুরু

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :

প্রথমবারের মতো লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবসে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিন দিনের এই জাতীয় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া লালন মাজার মুক্ত মঞ্চে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা পারভিন।

এসময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুর রহমান, লালন বক্ততায় মুখ্য আলোচক ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান লেখক ও গবেষক প্রফেসর গায়ত্রী চক্রবর্তি স্পিভাক, বিশিষ্ট কবি, লেখক ও চিন্তক এবং লালন বিশেষজ্ঞ ফরহাদ মজহার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আল মামুন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ফরিদা পারভীনের স্মরণে তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। পরে লালন সংগীতানুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট শিল্পীগণ সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। সারা রাতব্যাপী এই চলে এই সংগীতযজ্ঞ।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘লালন দর্শন বহু মাত্রিক। এই প্রথমবারের মতো লালনের তিরোধান অনুষ্ঠান জাতীয়ভাবে পালন করতে পারায় সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিটি মানুষের নজর কেড়েছে। আমি ঢাকায় অবস্থান করলেও মনে ও প্রাণে রয়েছি লালনের মাজারের পাশে আপনাদের সাথেই। লালন ভক্ত, বাউল, সাধক ও ফকিরদের প্রতি আমার অগাধ ভালবাসা শ্রদ্ধা ও পরম পাওয়া।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা পারভিন বলেন, ‘জাতীয়ভাবে লালনের তিরোধান অনুষ্ঠান প্রথমবারের মতো কুষ্টিয়ায় হওয়ায় লালন ভক্ত ও সাধু বাউলদের সম্মান বেড়েছে। সাংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য রাখে।’

তিনি বলেন, ‘কুষ্টিয়া অঞ্চলে তামাক পাতা চাষ হয়। এই তামাক পাতা গরু ছাগল ও গবাদি পশুরা কখন খাই না কিন্তু আমরা মানুষ হিসেবে কেন খাই তা আমার বোধগম্য নয়। তাই বিষযুক্ত তামাক চাষ ও খাওয়া বন্ধ করতে হবে।‘

তিনি আরো বলেন, ‘লালন মাজারে পূর্ণ সেবাই বাউলদের ইলিশ মাছ বিতরণ করা হয়। বর্তমানে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এই মাছ শুধুমাত্র লালনের সাধু বাউলদের জন্য কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা শুরুর অনেক আগেই কিনে ফ্রিজ করে রেখছিল।’

তিনি বলেন, ‘লালন সাইজী ইলিশ পছন্দ করতেন তাই তিরোধান দিবসে সাধু বাউলদের পূর্ণ সেবাই ইলিশ মাছ দিয়ে আপ্যায়ণ করা হয়। পরে লালন অ্যাকাডেমি শিল্পীদের পরিবেশনায় সঙ্গীতানুষ্ঠান শুরু হয়। সারা রাত এতে লালন শিল্পী ও বাউলেরা ভরাট কন্ঠে লালনের গান গেয়ে যাবেন।’

এদিকে লালন তিরোধান অনুষ্ঠানে দেশ বিদেশের হাজার হাজার ভক্তও বাউলেরা লালন মাজার এলাকায় গত কয়েক দিন আগে থেকেই আসতে শুরু করেছেন। জাতীয়ভাবে এবারকার অনুষ্ঠান ও আয়োজন সফল করতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। লালন মাজার এলাকায় তিন দিনের লালন মেলার আয়োজন থাকায় দর্শনার্থীদের আকর্ষন বেড়েছে। মাজার এবং মেলা প্রাঙ্গনসহ কয়েক মাইল এলাকা জুড়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিরবিচ্ছন্নভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবার অন্যবারের চেয়ে মানুষের উপস্থিতি রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই লালন মাজারের সব গুলো সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। যানজটের কারণে মাজারের কয়েক মাইল আগ থেকে পায়ে হেটে মানুষদের মাজার প্রাঙ্গনে যেতে হচ্ছে। শহরের সকল হোটেল ও রেষ্ট হাউজ পূর্ণ হওয়ায় শত শত মানুষকে লালন মাজার এলাকা, বাসষ্ট্যান্ড ও রেলষ্টেশন এলাকায় অবস্থান করতে দেখা যায়। অনেককে হোটেলে হোটেলে ঘুরতে দেখা যায়। হোটেলে রুম না পাওয়ায় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।’

আজ দ্বিতীয় দিনে ঢাকার সোহরাওয়ার্দি ময়দানে লালন তিরোধানের জাতীয় অনুষ্ঠান হবে। এছাড়া দ্বিতীয় দিনে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন মঞ্চে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে।

এই বাংলা/এমএস

টপিক