25 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

পাপড় বিক্রি করে জীবনের ঘানি টানছেন নব্বই বছরের বৃদ্ধ সামাদ

আরও পড়ুন

::: নিজস্ব প্রতিবেদক :::

আব্দুস সামাদের বয়স নব্বইয়ের কোঠায়। বয়োবৃদ্ধ  মানুষটির কপালে চিন্তার ভাঁজ  এখনো  আয় রোজগার নিয়ে ।যে বয়সে মানুষ অবসরের আরাম আয়েশ খুঁজেন, সেই বয়সেই তার খড়তাপে ঘাম ঝড়ানো পরিশ্রম রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে।

বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে আসা আবদুস সামাদের মাথায় এমনই ভারী বোঝা তুলে দিয়েছে জীবনের নিষ্ঠুর বাস্তবতা। নির্মম এই জীবন তাঁকে দিয়েছে চরম দারিদ্র্যতা।

দিনের সারাটি ক্ষণ জুড়ে তপ্ত রোদ। ছাতা ছাড়া রাস্তায় বের হওয়াই কঠিন। এমন রোদের ভেতরে মাথায় গামলাভর্তি পাঁপড় নিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে পথে নেমেছেন আবদুস সামাদ। বয়সের ভারে তাঁর পিঠ কুঁজো হয়ে গেছে।

আবদুস সামাদ জানান তাঁর বয়স ৯৬ বছর। জানালেন, গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার নাওডোবা গ্রামে। তিনি ১৫ বছর ধরে আজিমপুর এলাকায় পাঁপড় বিক্রি করছেন। মেয়ের সঙ্গে থাকেন রাজধানীর লালবাগ থানার শহীদনগরের একটি ভাড়া বাসায়। দুই কক্ষের ওই বাসায় মোট ছয়জন থাকেন। মেয়ের সঙ্গে থাকলেও প্রতি মাসে আবদুস সামাদকে বাসা ভাড়া বাবদ গুনতে হয় ৪০০ টাকা। খাওয়া ও অন্যান্য খরচ সবই তুলে দিতে হয় মেয়ের হাতে।

আবদুস সামাদের চার মেয়ে ও এক ছেলে। জীবিকার তাগিদে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন বেশ কয়েক বছর আগে। ঢাকায় ছেলে-মেয়েদের বিয়েও দিয়েছেন। তবে তাঁদের কেউ সচ্ছল নয়। দিনমজুর ও অন্যের বাসায় কাজ করে চলে তাঁদের সংসার। এর মধ্যে বৃদ্ধ বাবার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার সামর্থ্য তাঁদের নেই। এ কারণে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এখনো জীবিকার জন্য ছুটে চলতে হচ্ছে সামাদকে।

আবদুস সামাদ আরো জানান, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থেকে প্রতিদিন দিনে ৭০০-৮০০ টাকার পাঁপড় কেনেন। সেখান থেকে রিকশায় করে আজিমপুর এলাকায় এসে বিক্রি করেন। এসব পাঁপড় বিক্রি করে দিনে ২৫০-৩০০ টাকা আয় হয় তাঁর। এ দিয়েই কোনোমতে জীবন চালাচ্ছেন তিনি। সরকারের কাছ থেকে বয়স্ক ভাতা পেলেও স্বল্পমূল্যের চাল, ডাল, আটা, তেল কেনার কোনো কার্ড পাননি।একটু মানবিক সহযোগিতা পেলে এ মানুষগুলোর কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে সরকারের কাছে স্বল্প মূল্যের চাল,ডাল,আটা ও তেল কেনার টিসিবি কার্ডের আকুতি জানিয়েছেন তিনি।

এইবাংলা/ হিমেল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর