::: ফরিদপুর প্রতিনিধি :::
ফরিদপুরের মধুখালিতে স্কুল ঘরে একজন কিশোর ও তার বাবাকে ক্লাসরুমে আটকে বেধড়ক মার দেবার ভিডিও ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। গত শুক্রবার (১৭ মার্চ) একটি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ভিডিওতে একটি মেয়ে এবং বেশ কিছু যুবক তাদের বেদম পিটুনি দেয়৷ ভিডিওটি ভাইরাল হবার আগেই সেই কিশোর ও তার পিতাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে ধর্ষণের অভিযোগে।
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ একজন স্কুল পড়ুয়া শিশুকে যৌন নির্যাতন করার। নির্যাতনের শিকার হওয়া সেই শিশুটি সম্পর্কে মার খাওয়া কিশোরের সৎ বোন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হবার পর পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা প্রকৃত ঘটনা জানতে তৎপর হয়েছে। পরে এ নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত মো. কুতুবউদ্দিন (২৫) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নির্যাতিত ইয়ামিন মৃধা রাজু ও তার ছেলের নাম রাজন মৃধা। তারা মাঝকান্দী গ্রামে মো. সালাম শেখের বাড়িতে দীর্ঘদিন ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছেন। তাদের বাড়ি উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের (সালমতপুর) রউফনগর গ্রামে। নদী ভাঙনে ভিটামাটি হারিয়ে প্রায় ১২ বছর মাঝকান্দি এলাকায় ভাড়া থাকেন। নিজের মেয়ে ও বোনকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলে পরিকল্পিতভাবে তাদের নির্যাতন করা হয়।
রোববার (২৬ মার্চ) মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম প্রধান অভিযুক্ত ওই যুবককে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি শহিদুল জানান, গত শুক্রবার (১৭ মার্চ) দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে স্থানীয় একটি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে এক কিশোর ও তার বাবাকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে সোমবার (২০ মার্চ) মধুখালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।পরে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রধান অভিযুক্ত কুতুবউদ্দিন নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরের পরিবার উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মাঝকান্দি নামক এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকে। তাদের গ্রামের বাড়ি মাগুরায়। ওই কিশোর ও তার বাবা পৃথক দুটি জুট মিলে শ্রমিকের কাজ করেন। কিশোরের মা প্রবাসে রয়েছেন। যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠা শিশু তার সৎ বোন।
স্থানীয়দের অভিযোগ ওই কিশোরের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া সৎ বোনকে যৌন নির্যাতন করে আসছে বাবা-ছেলে মিলে। এমন অভিযোগের সূত্র ধরেই তাদের স্থানীয় একটি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে আটকে কয়েকজন যুবক ও তরুণী মিলে মারধর করে। পরে, নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। নির্যাতনকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি তোলা হয়।
এ ব্যাপারে মধুখালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, খুব শিগগিরই এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এ ঘটনায় ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষকরা জড়িত আছে কি-না সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।
এছাড়া এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের (এসপি) সঙ্গে কথা বলেছি।