সানাউল্লাহ রেজা শাদ, বরিশাল::
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর তীরে অবস্থিত চর মিঠুয়া—দূর থেকে দেখে যে কাউকে মনে হবে সাধারণ একটি নদীবেষ্টিত চরগ্রাম। তবে এই শান্ত-সাদামাটা গ্রামের বুকের নিচে চাপা পড়ে ছিল এক বিস্ময়কর ইতিহাস।
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে নদীতলদেশে নিঃশব্দে ঘুমিয়ে থাকা এক বিশাল জাহাজ—সম্প্রতি তা উদ্ধার হওয়ায় হঠাৎ করেই বদলে গেছে চর মিঠুয়ার চিত্র। হাজারো কৌতূহলী মানুষের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠেছে এক সময়ের নিস্তরঙ্গ জনপদ।
উদ্ধার হওয়া জাহাজটি জাপানি নির্মিত, আকারে বিশাল, এবং ধারণা করা হচ্ছে—আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথে ব্যবহৃত হতো। এক সময় তেঁতুলিয়া নদী ছিল বিদেশি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ রুট। সেই ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করছে এই জাহাজটি, যা আজ ভেসে উঠেছে আলোয়—শুধু চরবাসীরই নয়, গোটা দেশের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে।
উদ্ধারকাজটি ছিল দীর্ঘ ও ব্যয়সাপেক্ষ। এক যুগেরও বেশি সময়ের পরিকল্পনা, প্রচেষ্টা এবং কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেই জাহাজটি নদীতল থেকে উপরে তুলে আনা সম্ভব হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, তাঁরা কখনো ভাবেননি তাঁদের গ্রামের নিচে এমন কিছু লুকিয়ে থাকতে পারে। এখন প্রতিদিন হাজারো মানুষ ভিড় করছেন চর মিঠুয়ায়—জাহাজ দেখতে, ছবি তুলতে এবং একটুখানি ইতিহাস ছুঁয়ে দেখতে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, সবাই যেন মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছেন এই বিরল দৃশ্যের দিকে।
চর মিঠুয়া এখন শুধুই একটি চর নয়—এ যেন পরিণত হয়েছে এক জীবন্ত জাদুঘরে, যেখানে নদীর বুক ফুঁড়ে উঠে এসেছে অতীতের এক অপার বিস্ময়।