সানাউল্লাহ রেজা শাদ, বরগুনা::
সাগরের নীলিমা আর সবুজের মায়াজালে ঘেরা বরগুনার তালতলী। এখানকার সকাল শুরু হয় নদীর কূল ধরে ট্রলারের হালকা ঢেউয়ের শব্দে। শুভসন্ধ্যা সমুদ্রসৈকত, টেংরাগিরি ইকোপার্ক, রাখাইন পাড়া, নিদ্রার চর—প্রকৃতির কোলে মোড়া প্রতিটি স্থান যেন অপেক্ষা করছে পর্যটকের পা ছোঁয়ার জন্য। আর কৃষি ও মৎস্যভিত্তিক ব্যবসায় সম্ভাবনার ঝর্ণা প্রবাহমান। কিন্তু এই স্বপ্নের মাঝেই একটি বড় প্রতিবন্ধকতা—সদর উপজেলার সঙ্গে সরাসরি ফেরি যোগাযোগ নেই।
স্থানীয়রা বলছেন, “যাওয়া আসার খরচই আমাদের জন্য বড় বোঝা। ট্রলারে যাতায়াত করতে প্রতিজন খরচ হচ্ছে ৫০ টাকা। দিনে যাওয়া-আসা মিলিয়ে দাঁড়াচ্ছে ১০০ টাকা। যদি একটি স্থায়ী ফেরি চালু হয়, আমরা শুধু খরচ বাঁচাব না, আমাদের জীবনও সহজ হবে।”
চালিতাতলী-বগি ফেরিঘাট সংযোগ সড়ক প্রায় দেড় কিলোমিটার। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম জানালেন, “এখনও কাজ শুরু হয়নি। তবে এটি শেষ হলে ফেরি চলাচল দ্রুত শুরু করা সম্ভব।”
বরগুনা জেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মেহেদী হাসান খান বলেন, “বর্ষার ভারী বৃষ্টির কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। আশা করছি, ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। তারপর ফেরি চলাচল শুরু হবে।”
স্থানীয়দের চোখে চোখ রেখে শুনলে বোঝা যায়, তাদের প্রত্যাশা শুধু যোগাযোগের সুবিধা নয়। ফেরি চলাচল মানেই নতুন জীবনের ছোঁয়া—পর্যটনের গতি, ব্যবসার প্রসার, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার উন্নয়ন। ছোট্ট নদী পারাপারের ট্রলারগুলো যেমন তাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ, তেমনি ফেরি তাদের স্বপ্নের সেতু।
তালতলীর মানুষ এখন শুধু অপেক্ষা করছে—ফেরি চলুক,একবার যখন ট্রলার বদলে স্থায়ী ফেরি উঠবে, তখন এই অঞ্চলের ছবি বদলে যাবে। নদী আর সবুজের এই কোণে গড়ে উঠবে উন্নয়নের নতুন অধ্যায়, যা দেখতে সবাই মুখিয়ে আছে।