স্টাফ রিপোর্টার::
গাজীপুরে নির্মম ও হৃদয়বিদারক এক ঘটনায় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় একদল সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।
তুহিন ছিলেন একজন কর্মঠ, নিষ্ঠাবান এবং সমাজের অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার সংবাদযোদ্ধা। তার পেশাদারিত্ব, সততা ও দায়িত্ববোধ সবসময় সহকর্মীদের জন্য অনুকরণীয় ছিল। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে সাংবাদিক সমাজে নেমে এসেছে শোকের ছায়া, সঙ্গে আছে ক্ষোভ ও আতঙ্ক।
জানা গেছে, আসাদুজ্জামান তুহিনের দুটি শিশু সন্তান রয়েছে। তার অকাল মৃত্যুতে পরিবারটি চরম অসহায় হয়ে পড়েছে। সাংবাদিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এই আশঙ্কায় যে, নিরাপত্তাহীনতায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে কিনা।
একই দিন, সংবাদ সংগ্রহের সময় সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন দৈনিক বাংলাদেশের আলো-এর সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন সৌরভ। এসব ঘটনায় উদ্বিগ্ন সারাদেশের সাংবাদিক সমাজ।
জকিগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব-এর পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ ও তিন দফা দাবি জানানো হয়েছে:
১. সাংবাদিক তুহিন হত্যার দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
২. নিহত সাংবাদিকের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান।
৩. সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দ্রুত আইন প্রণয়ন এবং সারাদেশে সাংবাদিক নিপীড়নের ঘটনার বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। প্রেসক্লাবের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “সাংবাদিক হত্যা কোনোভাবেই একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা দোষীদের দ্রুত শাস্তি ও সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ চাই।”
জকিগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব-এর সভাপতি জুবায়ের আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব লায়েক এক বিবৃতিতে বলেন, “তুহিন ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠ। তার মৃত্যুতে সাংবাদিক সমাজ আজ গর্ব হারালো, সাহস হারালো।”
তারা আরও বলেন, “আমরা তার শোকসন্তপ্ত পরিবার, সহকর্মী, শুভানুধ্যায়ী এবং সাংবাদিক সমাজের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। সেই সঙ্গে দাবি জানাই—এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অপরাধীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।”
আল্লাহ তুহিনকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন। আমিন।—“জকিগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব”