25.3 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

লন্ডনে আলোচনা সভায় ব‍্যারিস্টার নাজির:

জুলাই ঘোষনা’তে প্রবাসীদের অবদানের স্বীকৃতি এবং আসন্ন নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে

আরও পড়ুন

শ‌হিদুল ইসলাম, বি‌শেষ প্রতি‌বেদক::

২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার জুলাই ঘোষনা’তে প্রবাসীদের অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি সন্নিবেশ করতে হবে। আগামী সংসদ নির্বাচনে সকল প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রবাসীদের ভোটার তালিকা প্রস্তুতসহ প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণে নির্বাচন কমিশনের ‍ কর্মতৎপরতা দৃশ্যমান চাই।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছর হতে চলল। নির্বাচনের আর বেশী সময় নেই। এজন‍্য প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের কাজ করতে হবে দ্রুত গতিতে। সোমবার (২৮ জুলাই) লন্ডনে স্ট্যান্ড ফর বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত “জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্খা ও প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবায়ন: সম্ভাবনা ও করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত দাবি জানান প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক, বৃটেন প্রবাসী বিশিষ্ট আইনজীবী, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও লন্ডনের নিউহ্যাম বারার টানা তিন বারের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ব্যারিস্টার নাজির আহমদ।

স্ট্যান্ড ফর বাংলাদেশ-এর সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম শামিমের সভাপতিত্ব এবং সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মুকুলের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক স্পিকার কাউন্সিলর ব্যারিস্টার সাইফ উদ্দিন খালেদ, দৈনিক আমার দেশ-এর বিশেষ প্রতিনিধি বিশিষ্ট সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান, আইনজীবী ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা আমিন চৌধুরি, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি সাংবাদিক রহমত আলী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার নাজির আহমদ বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেড় কোটি প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রবাস থেকে যেন ভোট দিতে পারেন – এটা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি। দুঃখজনক হলেও সত্য যে অতীতের কোনো সরকারই এই দাবি পূরণে সত্যিকার আন্তরিকতা দেখায়নি। বিগত ৫৪ বছর শুধু মুলা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। অথচ এই দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশের নাগরিক। তারা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তাদের অবদান ছিল অপরিসীম। একমাস রেমিট্যান্স শাট ডাউন করে পতিত সরকারের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল। ভোটের অধিকার তাদের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার। এবার যদি প্রবাসীদের ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করা না হয় আর কখনও হয়তো করা হবে না। কোনো রাজনৈতিক সরকার করবে না। আশ্বাসের মধ্যেই রাখাকে তারা শ্রেয় মনে করবে। সুতরাং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সব প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধভাবে দাবি জানাতে হবে – আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেকোনো উপায়ে প্রবাসীরা প্রবাস থেকে যেন ভোট দিতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে।

এবার না হলে আমাদের জীবদ্দশায় হয়তো আর হবে না। তাই সমস্বরে আওয়াজ তুলতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের দেড় বছরেও নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারছেন না। দেশের প্রায় এক দশমাংশ নাগরিকের ভোটাধিকারের আওতায় আনতে সময় লাগলে প্রয়োজনে নির্বাচন পিছান। কিন্তু দেশের এতো বিপুল সংখ্যক নাগরিকদের ভোটাধিকারের বাহিরে রেখে গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না।

ব্যারিস্টার নাজির আহমদ আরো বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর হতে চলল এখন পর্যন্ত এর আইনি কোন ভিত্তি নেই, নেই কোন লিখিত দলিল। এভাবে চলতে থাকলে ইতিহাসের দীর্ঘ বাঁকে এক সময় গণঅভ্যুত্থান হারিয়ে যাবে, চালু হবে মিথ্যা ও বানোয়াট বয়ান। পতিত সরকারের রেখে যাওয়া ও কাঁটাছেড়া করা সংবিধান এখনও বহাল ও কার্যকর রয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও গণঅভ্যুত্থানের নায়করা সত‍্যিই আগুনের উপর দাঁড়িয়ে আছেন। সঠিক সময়ে সঠিক কাজ না করলে কোন কারণে পতিত সরকার বা তাদের মদদপুষ্ট কোন গোষ্ঠী সরকারে আসতে পারলে বিদ‍্যমান সংবিধানের আলোকেই সংশ্লিষ্টদের করুন পরিনতি ভোগ করতে হবে। তিনি অবিলম্বে গণঅভ্যুত্থানের লিখিত দলিল হিসেবে “জুলাই ঘোষনা”র আহবান জানান এবং জুলাই ঘোষনাতে প্রবাসীদের অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি সন্নিবেশ করার জোর দাবি জানান।

বিশেষ অতিথি বক্তব্যে ব্যারিস্টার সাইফ উদ্দিন খালেদ বলেন, দেড় কোটি প্রবাসীদের ভোটাধিকার তাদের ন‍্যায‍্য অধিকার। এটা আসন্ন নির্বাচনেই নিশ্চিত করতে হবে। সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। তারা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখছেন। তাদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাদের ভোটাধিকার আসন্ন নির্বাচনে নিশ্চিত করতে হবে। সাবেক সেনা কর্মকর্তা আমিন চৌধুরী বলেন, সংবিধান এখনও বহাল। জুলাই ঘোষনা দিতে ব্যর্থ হলে বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের কঠোর পরিনতি অপেক্ষা করছে। তিনি প্রবাসীদের নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতের জোর দাবি জানান।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্ট্যান্ড ফর বাংলাদেশের সহসভাপতি ড. মুহাম্মদ মুঈনুদ্দীন মৃধা ও মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম, পিস ফর বাংলাদেশের সহসভাপতি মাহিন খান, অনলাইন একটিভিস্ট ফোরাম ইউকের সভাপতি জয়নাল আবেদিন, জাস্টিস ফর ভিক্টিমস ইউকের সভাপতি জহিরুল ইসলাম, রাইটস অব দ্যা পিপলের সভাপতি আসাদুজ্জামান শাফী, স্ট্যান্ড বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন আলম, তথ্য সম্পাদক সিরাজুম মুনির, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই ইউকের সহকারি সেক্রেটারি রায়হান আহমেদ, ইস্ট লন্ডন শাখা সভাপতি আব্দুল হামিদ তাজুল প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর