সানাউল্লাহ রেজা শাদ , বরগুনা:
একদিকে বঙ্গোপসাগর, অন্যদিকে নদীর মোহনা। মাঝখানে বিস্তৃত সবুজ কেওড়া ও ঝাউবন। জোয়ার-ভাটার খেলায় বদলে যায় রূপ—ঘাসে ঢাকা নরম প্রান্তর কখনো জেগে ওঠে, কখনো আবার হারিয়ে যায় জলের তলায়। এমনই এক স্বপ্নময় স্থান ‘নিদ্রার চর’ বা ‘নিদ্রার সৈকত’। নামটি এসেছে এর নির্জনতা ও শান্ত পরিবেশ থেকে।
পর্যটন সৌন্দর্যের জেলা বরগুনার তালতলি উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই চরটি। একদিকে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী রাখাইন পল্লী, অন্যদিকে শুভসন্ধ্যা সমুদ্রসৈকত ও টেংরাগিরি বনাঞ্চল। আর এখন নিদ্রার চর ঘিরেও পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটে আসছেন এই নির্জন সৈকতে।
তালতলী উপজেলা সদর থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই চরটি প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ হলেও স্থানীয়দের দাবি, এটি ৫-৭ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। বর্ষাকালে কিছু অংশ পানির নিচে চলে গেলেও শীতকালে এটি হয়ে ওঠে আরও মোহময়।
পর্যটকরা বলছেন, বন, সমুদ্র, রাখাইন সংস্কৃতি—সব একসঙ্গে দেখা যায় এখানে। এ যেন প্রকৃতির এক অপূর্ব মিলনমেলা। কেউ কেউ বলছেন, এই চরটি কল্পনার চেয়েও বেশি সুন্দর।
তবে সৌন্দর্যের পাশাপাশি রয়েছে কিছু চ্যালেঞ্জও। এখনো পর্যন্ত অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি তেমন একটা। পর্যটকরা অভিযোগ করছেন, রাস্তাঘাট বেহাল। বাইক কিংবা গাড়ি নিয়ে যাতায়াত দুঃসাধ্য। নেই কোনো আবাসিক হোটেল কিংবা ভালো মানের খাবারের দোকান। অনেককে হেঁটে চরে পৌঁছাতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. শফিউল আলম বলেন,
“তালতলীতে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক থেকে তালতলীতে যে সড়কটি ঢুকেছে, তার সম্প্রসারণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আমরা আশাবাদী, অবকাঠামো উন্নয়ন ও স্থানীয়দের অংশগ্রহণে নিদ্রার চর একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে উঠবে।”