নিজস্ব প্রতিবেদক ::
শেখ মুজিবুর রহমান, তাজ উদ্দিন আহমেদসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের চারশত নেতার ‘মুক্তিযোদ্ধা’ স্বীকৃতি বাতিল করা হয়েছে – এমন গুজব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর নানামুখী সমালোচনা শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে এ দিয়ে উত্তাল ফেসবুক। যদিও সমকালসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরের সত্যতা নেই বলে দাবি করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজমসহ সরকারের দায়িত্বশীলরা।
গুজব ডালপালা মেলতে শুরু করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধন করার পর।গতকাল ( মঙ্গলবার) রাতে অধ্যাদেশ জারি করে মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছিলো।সেখানে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরিবর্তনের পাশাপাশি আগে যারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত ছিলেন, তাদের একটি অংশকে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ বলা হয়েছে।তাতে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতাসহ মুজিবনগর সরকারের এমএনএ বা এমপিএদের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি আর থাকল না বলে খবর প্রকাশিত হয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।
বুধবার সকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, “এই যুদ্ধটা এই সরকার (মুজিবনগর) পরিচালনা করেছে। এই সরকারের লেজিটিমেসির বাইরে কাউকে স্বীকৃতিই দেওয়া হয় নাই। এই সরকারটাই তখন ছিল বাংলাদেশে স্বীকৃত সরকার, যেটা প্রবাসী সরকার।”
বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চারনেতাসহ মুজিবনগর সরকারের নেতাদের ‘মুক্তিযোদ্ধা’ স্বীকৃতি বাতিলের খবরটি ‘সঠিক নয়’ বলে মন্তব্য করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, “এটা সঠিক নয়। সঠিক নয় এই অর্থে যে এখানে সুস্পষ্টভাবে লেখা আছে, ‘প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার (মুজিবনগর সরকার)। মুজিবনগর সরকার লেখা আছে, তাজউদ্দীন সাহেব ছিলেন, মনসুর আলী সাহেব ছিলেন, কামারুজ্জামান সাহেব ছিলেন, খন্দকার মোশতাক সাহেব ছিলেন, এরা সবাই মুক্তিযোদ্ধা।”
বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা দিয়ে তিন বছর আগের করা জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধন করে মঙ্গলবার রাতে অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদ, মো. মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানসহ শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল নিয়ে প্রকাশিত সংবাদকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর বলে উল্লেখ করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
বুধবার দুপুরে ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’এর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এবং দুই মন্ত্রী মো. মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানসহ শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল বলে সমকাল, যুগান্তর, ইত্তেফাক ও কালেরকন্ঠসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর।’