26 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কারে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ 

আরও পড়ুন

সানাউল্লাহ রেজা শাদ, বরগুনা:::

২০২৩ সালের ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে। তবে বরগুনায় এর প্রকৃত তাণ্ডব চলে ২৭ মে সকালে। ওইদিন ঘরবাড়ির পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বরগুনার ২২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্কারে প্রায় এক কোটি টাকার বরাদ্দ আসে। তবে সেই অর্থে কাজ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেয়ালে ফাটল ও মেঝেতে ক্ষতি দেখিয়ে বরাদ্দ মেলে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, কিন্তু সংস্কার কাজ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। এ রকম অভিযোগ রয়েছে বরাদ্দপ্রাপ্ত অধিকাংশ স্কুলের ক্ষেত্রেই। অনেক ক্ষেত্রে অর্থ বাড়ানোর জন্যও ভুয়া ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ করা হয়েছে।

আয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফজলুল হক জানান, “আমাদের স্কুলের মোটর নষ্ট হয়েছে এবং বাতাসের কারণে বেশিরভাগ ফ্যানই অকেজো হয়ে গেছে।”

পশ্চিম ডেমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আইরিন সুলতানা বলেন, “স্কুলের সাবমারসিবল পাম্প নষ্ট হয়েছিল, সেটা সারিয়েছি। পরে কেচি গেট ও দরজাগুলোও মেরামত করা হয়েছে।”

তবে প্রতিষ্ঠানের প্রধান সুনির্দিষ্ট ভাবে ক্ষয়ক্ষতি দেখাতে বা বর্ণনা করতে পারেননি ।

ইউটিডিসি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা: ফেরদৌস বেগম জানান, “নতুন ভবনগুলোতে লক্ষাধিক টাকা বরাদ্দ এসেছে। আমাদের স্কুল সবচেয়ে কম বরাদ্দ পেয়েছে, অথচ ভবনের অবস্থা ভয়াবহ।আমাদের দরকার নতুন ভবন ক্লাস চালাচ্ছি পরিত্যাক্ত ভবনেই।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বরাদ্দের পেছনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসের যৌথ কারসাজি রয়েছে।

এবিষয়ে সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হননি সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার‌ ও সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসাররা ‌।
সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে অফিসের কাজ ফেলে বাইরে চলে যায় অফিসের অন্যান্য কর্মচারীরা ।

এ বিষয়ে সনাকের সভাপতি মনির হোসেন কামাল বলেন, “যারা অর্থ আত্মসাৎ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা যদি দোষী প্রমাণিত হয়, তাহলে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু জাফর মো. ছালেহ বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দের চাহিদা চাওয়া হয় মাঠপর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতে। আমি মনে করি এই চাহিদা যাচাই-বাছাই করে আরও সঠিকভাবে বরাদ্দ দেওয়া উচিত। যদি কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি থাকে, তবে সরকারের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুধু সদর উপজেলাই নয়, বরগুনার অন্য পাঁচটি উপজেলাতেও অনুরূপ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাই শুধু আশ্বাস নয়, এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন সচেতন মহল ও শিক্ষার্থীরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর