আল আমিন, নাটোর প্রতিনিধি ::
আজ ৫ মে নাটোরের লালপুর উপজেলার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল গণহত্যা দিবস।
১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাক হানাদার বাহিনী সুগার মিল অবরুদ্ধ করে তৎকালীন প্রশাসকসহ ৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শতাধিক লোককে ব্রাশ ফায়ার করে গণহত্যা করে।
স্বাধীনতার পর শহীদদের সলিল সমাধির নিরব স্বাক্ষী গণহত্যা স্থলের পুকুরটির নাম করণ করা হয়েছে ‘শহীদ সাগর’।
লালপুর বাসীর জন্য এটি একটি শোকাবহ স্মরণীয় দিন। পাক হানাদার বাহিনীর লোমহর্ষক হত্যাযজ্ঞের নীরব স্বাক্ষী বুলেট বিদ্ধ হয়ে লাশের স্তুপের নিচে চাপা পড়েও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় কয়েকজন।
এই গণহত্যায় শহীদদের কয়েকজন হলেন, লেঃ আনোয়ারুল আজিম, সহিদুলাহ, গোলজার হোসেন তালুকদার, সাইফুদ্দিন আহমদ, আবুল হোসেন, আবদুর রউফ, মান্নান ভূইয়া, গোলাম কিবরিয়া, নূরুল হক, আজহার আলী, মকবুল হোসেন, আবুল বাসার, মনসুর, রহমান, সাজেদুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, হাবিবুর রহমান, মোসাদ্দারুল হক, মোকসেদুল আলম, আঃ রহমান আমিন, মোঃ আলী, মোজাম্মেল হক, আব্দুল মান্নান, ফিরোজ মিয়া, আক্তার উদ্দিন, সোহরাব আলী, আনোয়ারুল ইসলাম, পরেশ উলাহ, আঃ মান্নান, কামাল উদ্দিন, আবুল কাসেম, আব্দুর রব, শামসুল হক, আব্দুল মজিদ, আবুল কালাম, নজরুল ইসলাম, আয়েজ উদ্দিন, আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল, মোসলেম উদ্দিন, জহির উদ্দিন, শহীদুলাহ, মোঃ আলী প্রমুখ। এছাড়া আরো শহীদদের নাম পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়াও সেদিন যারা সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন তারা হলেন, খন্দকার জালাল আহমেদ, মেহমান আলী, নওসাদ আলী, খন্দকার ইমাদ উদ্দিন আহম্মেদ, আব্দুল জলিল সিকদার, তোফাজ্জল হোসেন, আজের আলী প্রমুখ।
শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে শহীদ সাগর চত্ত্বরে স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মিত হয়েছে। ১৯৭৩ সালের ৫ মে মিলের প্রশাসক লেঃ আনোয়ারুল আজিমের স্ত্রী বেগম শামসুন্নাহার শহীদ সাগর চত্ত্বরে স্মৃতিসৌধ উদ্বোধন করেন। তার নামানুসারে গোপালপুর রেল স্টেশনের নামকরণ হয়েছে আজিমনগর স্টেশন।
এছাড়া ২০০০ সাল থেকে দিনটিকে বাংলাদেশের চিনিকল সমুহের শহীদ দিবস হিসাবে দেশের সবকটি চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারিরা পালন করছে। প্রতি বছর শহীদদের আত্বীয়-স্বজন, মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় লোকজন ৫ মে শহীদ সাগরে সমবেত হন।