27.2 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরে শুরু হয়েছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের মহোৎসব

আরও পড়ুন

আল আমিন,নাটোর প্রতিনিধি :::

শস্যভান্ডার খ্যাত নাটোরের চলনবিল অঞ্চলে শুরু হয়েছে চলতি মৌসুমের বোরো ধান কাটা ও মাড়াই।চলনবিলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে সবুজ ও সোনালী ধানের শীষের সমারোহ। হিমেল বাতাস ও মিষ্টি রোদে দোল খাচ্ছে ধানের শীষ।

প্রতিটি মাঠে এখন কৃষকের সবুজ স্বপ্নে ছেয়ে গেছে।সেই সাথে ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনে নতুন স্বপ্ন দেখছে চলনবিলের কৃষকরা।

চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলাতে কৃষকরা প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যেই শুরু করেছে আগাম জাতের বোরো ধান কাটা।প্রচন্ড খরতাপ আর ঝড় ও শিলা বৃষ্টি আশঙ্কায় কিছুটা আগে ভাগেই শুরু করেছেন ধান কাটা।

চলতি বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলনও ভালো হচ্ছে সেই সাথে ভালো দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা।

আগামী সপ্তাহে পুরোদমে শুরু হবে ধানকাটা ও মাড়াইয়ের মহোৎসব। সেই উৎসবকে ঘিরে চলছে ধান কাটার শ্রমিক সংগ্রহ, খোলা পরিষ্কার ও মাড়াই যন্ত্র মেরামতসহ জমি থেকে ধান কেটে ঘরে তোলার নানা প্রস্তুতি। বসে নেই কৃষক পরিবারের সদস্যরা।

বর্ষামৌসুমে চলনবিলের জমিতে প্রচুর পরিমানে পলি পড়ায়, উর্বর হয় জমি আর সে কারনে চলনবিলের জমি গুলোতে ফলন বেশি হয়।

তাজপুর ইউনিয়নের কয়রা বাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদেন বলেন,এ বছর বিলের পানি আগে নেমে যাওয়ায় বেশির ভাগ মানুষ তাদের জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছে, ভালো ফলন, দামও বেশি পাচ্ছি।তিনি বলেন, আমি প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আগামী সপ্তাহের মধ্যে জমির সব ধান ঘরেতুলতে পারবো।

ডাহিয়া গ্রামের কৃষক কালাম বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ধানের ফলন বেশি কোনো প্রকার ক্ষয়ক্ষতি এখনো হয়নি শুধু বাতাসে ধান গুলো মাটিতে পড়ে যাওয়ায় কিছুটা অসুবিধায় পড়েছিলাম ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাচ্ছিলাম না।
শ্রমিক পাওয়ার পরে আমরা ভালোভাবে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছি।

পাবনা থেকে চলনবিলে ধান কাটতে আসা শ্রমিক রহিম বলেন,গতবছরের তুলনায় এবার ধান যেমন বেশি তেমনি দামও বেশি হওয়ায় পরেও আমাদের শ্রমিকের ম‚ল্যে বেশি পাচ্ছিনা আর তাতে করে খুব খুশি হতে পারছিনা।

শহরবাড়ি গ্রামের কৃষক আমিন আলী বলেন, এ বছর তিনি ৬০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধান আবাদ করেছেন। এখন পর্যন্ত ১৩ বিঘা ধান কর্তন করেছেন। ধানের ফলন এবার অনেক ভালো পাচ্ছেন।দামও অনেক ভালো। কিছুদিন আগে দুইদিন বৃষ্টি হলেও ধানের কোন ক্ষতি হয়নি।

ধান ব্যবসায়ী আঃ মতিন মৃধা বলেন, গতবছরের তুলনায় এবছর শুরুতেই কৃষক তার ধানের সঠিক দাম পাচ্ছে, আমরা মিনিকেট ধান কিনছি এক হাজার পাঁচশ টাকা করে এবং গুটি ও কাটারিভোগ সব গুলো ধানের দাম এবার একটু বেশি হয়তো আরও দাম বাড়তে পারে বলে ধারনা করছি।

সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে সিংড়া উপজেলায় ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমির ধান কর্তন করা হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের ফলন বেশি এবং তেমন কোনো পোকা মাকড়ের প্রভাব পড়েনি কৃষি জমিতে।

উপজেলায় কর্মরত ফিল্ড সুপারভাইজারগন
কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ দিয়েছেন। এবছর দাম ভালো হওয়ায় কৃষক লাভের মুখ দেখবে। চলনবিলে এবার শ্রমিক সংকট নেই, তাছাড়া
হার্বেন্ডার মেশিন দিয়েও ধান কাটা চলমান রয়েছে।ফলে কিছুটা হলেও শ্রমিক সংকট দুর হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর