26 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে রাখাইন ভাষা

আরও পড়ুন

সানাউল্লাহ রেজা শাদ ,স্টাফ রিপোর্টার::

শিশুর হাসি, ভাষা সবই মাতৃভাষায়। কিন্তু রাখাইন শিশুদের সেই ভাষা আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে। বরগুনার রাখাইন পাড়াগুলোতে নেই ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র। না আছে ভাষা শেখার সুযোগ, নেই ভাষা চেনার পথ। মাতৃভাষার অস্তিত্ব রক্ষায় তাই কার্যকর পদক্ষেপের দাবি উপকূলের রাখাইন আদিবাসীদের।

ফাল্গুনের রঙিন আকাশ, শিমুল-পলাশে রাঙা বসন্ত। যে ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছিল বাঙালি, সেই মাতৃভাষার মর্যাদায় আজও আমরা গর্বিত।
বাংলার মতোই এ দেশের রাখাইন আদিবাসীদেরও নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই ভাষা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। রাখাইন শিশুদের অনেকে নিজ মাতৃভাষায় কথা বলতে পারলেও চিনতে বা লিখতে জানে না বর্ণমালা। কারণ বরগুনার রাখাইন পাড়াগুলোতে নেই কোনো ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র।

একজন রাখাইন শিশু বলেন, ‘আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারি। কিন্তু আমরা তাদের অক্ষর লিখতে পারি না, বুঝতে পারি না। রাখাইন ভাষা আমাদের একটি ঐতিহ্য। আর এই ভাসার মাসে আমরা চাই যে, আমাদের এই রাখাইন ভাষাকে সংগ্রহ করে রাখা হোক।’

অন্য একজন রাখাইন শিশু বলেন, ‘আমাদের স্কুলে মূলত আমরা বাংলা আর ইংরেজি ভাষাটাই বেশি ব্যবহার করি। এটাই আমাদের চলে।’

একসময় রাখাইন কিয়াংগুলোতে ভাষা চর্চার ব্যবস্থা থাকলেও এখন আর নেই। স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা বলছেন, মাতৃভাষা টিকিয়ে রাখতে স্কুলে রাখাইন ভাষা শেখানোর উদ্যোগ নেয় জরুরি।

একজন রাখাইন বলেন, ‘আমাদের মাতৃভাষা শিশুদের পড়াশোনায় শেখানো হয় না। বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলা যায়। আমরা তো ছোট বেলায় পড়েছি, সেজন্য কিছু জানি। এখন সরকার উদ্যোগ না নিলে এটা তো বেঁচে থাকবে না।’

তালতলী সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরিমল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর যদি এটাকে চিহ্নিত করে যে এখানে এই রাখাইনরা লেখাপড়া করে সেখানে যদি এই ভাষাভাষীর শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয় তাহলে এই ভাষাটা ফিরে পাবে। মানে শিক্ষার্থী এখান থেকে অনেককিছু নিতে পারবে।’

উপকূলের আদিবাসীদের আত্মপরিচয়, আত্ম-অনুসন্ধান, ব্যক্তিত্ব গঠনে রাখাইন ভাষা সংরক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাখাইন মাতৃভাষা টিকিয়ে রাখতে রাখাইন ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম তিনি বলেন, ‘তালতলীতে রাখাইন কালচারাল সেন্টার নামে একটা সেন্টার করার উদ্যোগ সরকারের আছে। এবং এ বিষয়ে আমরা জায়গার খোঁজ করছি। আমরা আশা করি জায়গাটা পাওয়ার পর এখানে যদি কালচারাল সেন্টার করতে পারি তাহলে রাখাইন সম্প্রদায়ের ভাষা, সংস্কৃতি আমরা সংরক্ষণ করতে পারবো।’

মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারলেও লিখতে বা বর্ণমালা চিনছেন না রাখাইন শিশুরা। বরগুনার রাখাইন পাড়াগুলোতে নেই ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র। নিজস্ব ভাষা সংস্কৃতি সংরক্ষণে দ্রুতই সরকারি পদক্ষেপের দাবি উপকূলের রাখাইন আদিবাসীদের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর