স্বপন রবি দাশ, জেলা প্রতিনিধি হবিগঞ্জ:
হবিগঞ্জে ৬৭ হত্যাকান্ডে শেষ হলো ২০২৪ সাল। জেলায় এক বছরে ৬৭ জন হত্যা করা হয়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় ৯টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড হয় হাওরবেষ্টিত বানিয়াচং উপজেলায়।
মূলত আধিপত্য বিস্তার,পূর্বশত্রুতা ও জমিজমা নিয়ে বিরোধসহ বিভিন্ন ছোট ছোট কারণে এসব খুন সংগঠিত হয়েছে।পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে অধিকাংশ খুনের সঙ্গে জড়িত অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন তবে কমছে না হত্যাকাণ্ড। ২০২৩ সালের তুলনায় ২৪ সালে খুনের পরিমাণ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, গত বছর বানিয়াচং উপজেলায় ২২টি, নবীগঞ্জে ১০টি,চুনারুঘাটে ১০টি, হবিগঞ্জ সদরে ৭টি, মাধবপুর,বাহুবল ও লাখাই উপজেলায় ৫টি করে,শায়েস্তাগঞ্জে ২টি ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ১টি হত্যাকাণ্ড ঘটে।
এছাড়া আধিপত্য বিস্তার, পূর্বশত্রুতা ও জমিজমা নিয়ে বিরোধসহ বিভিন্ন কারণে এক বছরে অর্ধশতাধিক সংঘর্ষের ঘটনায় আরও অন্তত আড়াই হাজার লোক আহত হয়েছেন। নিহত অন্তত ২০ জন।
সংঘর্ষে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১ হাজারের বেশি লোক আহত হয়েছেন বানিয়াচং উপজেলায়। এছাড়া আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৪০০, লাখাইয়ে ২৫০, বাহুবলে ২৬০, নবীগঞ্জে ২ শতাধিক, সদর উপজেলায় শতাধিক ও শায়েস্তাগঞ্জে প্রায় ১০০ এবং মাধবপুরে অর্ধশতাধিক লোক আহত হন।
স্থানীয়রা জানান, বিট পুলিশিং সভাসহ বিভিন্নভাবে দাঙ্গা বিরোধী প্রচারণা চালালেও হবিগঞ্জ জেলায় দাঙ্গা ঠেকানো যাচ্ছে না। এ বিষয়ে সুপরিকল্পিত উদ্যোগ জরুরী। এক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও জেলা প্রশাসনকে আরও বেশি আন্তরিক হতে হবে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৩ সালে হবিগঞ্জে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ৩১টি। ২০২৪ সালে তা বেড়ে ৬৭ অর্থাৎ দ্বিগুণের থেকে বেশি হয়েছে। আহতের সংখ্যাও এক বছরে বেড়ে দ্বিগুণের বেশি।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডসহ কোনো অপরাধ যাতে বৃদ্ধি না পায়, এ জন্য আমরা সতর্ক রয়েছি। সব হত্যা মামলার আসামিদের হয়তো আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে বেশির ভাগ মামলার আসামিদের আটক করে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।
এদিকে, বানিয়াচং উপজেলায় এবার খুনের সংখ্যা অন্যান্য উপজেলার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হওয়ার কারণ- এ উপজেলায় ছাত্রজনতার আন্দোলন চলাকালে একদিনেই ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আগুয়া গ্রামে ৪ খুনের ঘটনা দেশজুড়ে আলোচিত হয়