25 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

ছাত্র জনতার জনরোষ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে

ফ্যাসিবাদের দোসর মুক্ত ঘোষণা প্রেসক্লাবকে

আরও পড়ুন

তানভীর আহমেদ :::

ছাত্র জনতার গণ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পালিয়ে যাবার পরপরই  আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছে পুরো চট্টগ্রাম নগর। জামালখানে অবস্থিত চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবকে ফ্যাসিবাদের দোসর মুক্ত ঘোষণা করে  বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

বিকেল সোয়া তিনটা থেকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ জড়ো হয় চট্টগ্রাম ভবনের সামনে। প্রেসক্লাব ভবনের সম্মুখভাগে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল  ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা। অনেককেই সিজদা অবনত হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে দেখা যায়।

বিকেল চারটার দিকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আসে মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা। সাধারণ সাংবাদিক, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ছাত্র আন্দোলনে  বিপক্ষে  চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব নেতাদের বিতর্কিত ভূমিকা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সমাবেশে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়নের সভাপতি ম. শাহনেওয়াজ।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আমার দেশ পত্রিকার আবাসিক প্রধান, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি জাহিদুল করিম কচি, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক রিদুয়ান সিদ্দিকী, সমন্বয়ক নীলা আফরোজ, সমন্বয়ক শাফায়াতুল ইসলাম, সমন্বয়ক ওমর ফারুক সাগর।

জাহিদুল করিম কচি বলেন, আমরা ছাত্র-জনতার প্রতি বিশেষ সম্মান জানাচ্ছি,       ‘ যারা আমাদের ফ্যাসিবাদের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দিয়েছেন। আমরা ওয়াসিম আকরাম,  আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ সব শহীদদের অভিবাদন জানাই, যারা শোষণের অবসান ঘটাতে প্রাণ দিয়েছেন। যারা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন, যাদের অঙ্গহানি হয়েছে, বুলেটের আঘাতে আহত হয়েছেন, মানসিক আঘাত পেয়েছেন এবং যারা পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব ও নিকটজনদের হারিয়েছেন, সবার সঙ্গে আমরা সহমর্মিতা-একাত্মতা প্রকাশ করছি। ‘

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক রিদুয়ান সিদ্দিকী বলেন, ‘ ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিয়ে ফ্যাসিবাদের নগ্ন চিত্রের উদাহরণ তৈরি করেছে কিছু বিতর্কিত সংবাদ কর্মী। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে ছাত্র আন্দোলন ও এক দফার কবর রচনার আহবান জানিয়েছেন এই প্রেসক্লাবের নেতারা। ছাত্র জনতার রক্ত রঞ্জিত বাংলাদেশে এসব তথাকথিত প্রেসক্লাব নেতাদের বিচার করতে হবে। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবকে ফ্যাসিবাদের দোসর মুক্ত করতে হবে। ‘

সমন্বয়ক ওমর ফারুক সাগর বলেন, ‘ দীর্ঘ সময় ধরে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ঘাঁটি হিসেবে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করেছে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব। এই প্রেসক্লাবে পাশ্ববর্তী দেশে রাজনৈতিক নেতাদের জন্মদিন, মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। প্রেসক্লাবের সভাপতি সালাউদ্দিন রেজার নেতৃত্বে টুঙ্গিপাড়ায় মাজারে ফুল দেয়া থেকে শুরু করে প্রতিনিয়ত  সরকারের বন্দনা হয়েছে, বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে । ‘

সমন্বয়ক পুষ্পিতা দাশ বলেন, ‘ ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে  আজ যে নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে, সেই বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদের দোসর, বিদেশি শক্তির তাঁবেদারদের জায়গা হবে না। ‘

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবকে ‘ ফ্যাসিবাদের দোসর মুক্ত ঘোষণা ‘ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের

সভাপতির বক্তব্য মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি  শাহনেওয়াজ বলেন, জনসমর্থন নিয়ে ছাত্ররা ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছেন। উন্মোচন করেছেন স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, অধিকার ও সম্ভাবনার নতুন দ্বার। আমাদের সামনে উন্মুক্ত হয়েছে নতুন বাস্তবতা ও সম্ভাবনা। নতুন বাংলাদেশ সত্য-সাহস, বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের আশা ও বিশ্বাস, নতুন প্রজন্ম সফলভাবে গণতন্ত্র গড়ে তুলবে এবং একটি অধিকারভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করবে যেখানে বৈষম্য, অবিচার ও ক্ষমতার অপব্যবহার আর থাকবে না। চট্টগ্রামের ফ্যাসিবাদ বিরোধী সাংবাদিক সমাজ এসব অঙ্গিকার  বাস্তবায়নে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

এসময় বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র সাংবাদিক সাইফুল্লাহ চৌধুরী, গোলাম মওলা মুরাদ, শহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম শিল্পী, সাংবাদিক সোহাগ কুমার বিশ্বাসসহ অন্যান্যরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর