নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নতুন মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন নগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক ডাঃ শাহাদাত হোসেন।রোববার (৩রা নভেম্বর) রাজধানীর ঢাকার স্থানীয় সরকার বিভাগের সভাকক্ষে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
মেয়রের শপথ অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী , বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার , বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী’সহ চট্টগ্রাম মহানগর , উত্তর ও দক্ষিণ জেলার সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন । এছাড়া সভা কক্ষের বাইরেও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্থায়ী কমিটির সদস্য , ভাইস- চেয়ারম্যান , চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টারা চেয়ারে বসার সুযোগ পেলেও বঞ্চিত হন চট্টগ্রামের মাটি ও মানুষের অবিসংবাদিত শহীদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পুত্র হুম্মাম। কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে অনুষ্ঠানে নির্ধারিত চেয়ারে বসার কথা থাকলেও হুম্মাম কাদের চৌধুরী ছিলেন দাঁড়িয়ে।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা হুম্মাম কাদের চৌধুরী দাঁড়িয়ে থাকলেও চেয়ার দখল করে বসে পড়েন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব আবুল হাশেম বক্কর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান। এস আলম গ্রুপের গাড়ি কেলেঙ্কারির ঘটনায় ১লা সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ানসহ তিন নেতার ‘পদস্থগিত’ করে বিএনপি। সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থায় ভেঙে দেয়া জেলা কমিটির সাবেক আহবায়ক ও দলে পদ হারানো নেতা আবুল হাসেম বক্করের চেয়ার দখল করে বসে থাকার বিষয়টি নিয়ে নানা কানাঘুঁষা শুরু হয়।
শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বলেন, ‘ পদস্থগিত নেতা আবু সুফিয়ানের পিছনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে। গুরুত্বপূর্ণ এই অনুষ্ঠানে প্রটোকল অনুযায়ী হুম্মাম কাদের চৌধুরী-কে চেয়ারে বসার সুযোগ দেয়া সাংগঠনিক শিষ্ঠাচার। কিন্তু হুম্মাম কাদের কে চেয়ার ছেড়ে না দিয়ে বসে থাকেন আবুল হাশেম বক্কর ও আবু সুফিয়ান। ‘
এই ঘটনা নিয়ে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আসা বিএনপির নেতা-কর্মীদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন । অনেককেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে দেখা যায়।
এই ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের বাসিন্দা বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ পদাধিকার বলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী চেয়ারে বসার যোগ্য । শিষ্টাচার পরিবার থেকে আসতে হয় । দল কখনো কাউকে শিষ্টাচার শিখিয়ে দেয় না । যে সব নেতা হুম্মাম কে চেয়ার ছেড়ে না দিয়ে চেয়ার দখল করে রেখেছিল, তাদের শিষ্টাচারের অভাব রয়েছে বলে আমি মনে করি । ‘
সম্প্রতি চট্টগ্রামে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ এক ছাত্রের জানাযায়ও একই ব্যক্তি শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ করেছিল। আগ্রাবাদ কমার্স কলেজ চত্বরে অনুষ্ঠিত কাউসার মাহমুদের জানাজায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পর বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়করা।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জুন মাসে চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ি চত্বরে অনুষ্ঠিত তারুণ্যের সমাবেশে বিএনপি নেতা হুম্মাম কাদেরকে বক্তব্য দিতে না দেয়ার ঘটনা কে কেন্দ্র করে মঞ্চে এবং মঞ্চের নিচে ব্যাপক হট্টগোল হয়। পরে ঊর্ধ্বতন নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপির হাইকমান্ড হুম্মাম কাদেরকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ প্রদান না করায় সভা মঞ্চের দায়িত্বে থাকা বিএনপি নেতৃবৃন্দের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।