রাহাত আহমেদ :::
দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের প্রতিষ্ঠানকে ঋন দিতে রাজি না হওয়ায় বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেডের (বিআইএফএফএল) সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস এম ফরমানুল ইসলামকে জোর করে পদত্যাগ পত্রে সই করানো হয়েছিলো। পাঁচ বছর আগে এমন ঘটনা ঘটলেও ভুক্তভোগী কর্মকর্তা ফরমানুল ইসলাম বল প্রয়োগ করে তাঁকে চাকরি থেকে পদত্যাগ করানোর দায়ে মামলা দায়ের করেছেন রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর)।
ভুক্তভোগী কর্মকর্তা ফরমানুল ইসলাম ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালতে মামলা করেন। মামলায় মোট ১২ জনকে আসামি করা হয়। মামলার আরও তিন গুরুত্বপূর্ণ আসামি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব সাজ্জাদুল হাসান, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং বিআইএফএফএলের বর্তমান সিইও এস এম আনিসুজ্জামান। অন্যরা বিআইএফএফএলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা।
২০১৯ সালের ঘটনা তুলে ধরে বিআইএফএফএলের সাবেক সিইও ফরমানুল ইসলাম বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে এই মামলা করেছেন।
বল প্রয়োগে চাকরি থেকে পদত্যাগ করানোর পাশাপাশি প্রতারণা ও মানহানির অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআইকে) অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এস এম ফরমানুল ইসলাম নিজেই এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই। বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেডের (বিআইএফএফএল) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এস এম ফরমানুল ইসলামকে ‘অন্যায়ভাবে ও জোরপূর্বক’ পদত্যাগপত্রে সই করিয়ে অফিস থেকে সোজা বাসায় চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন তখনকার অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার।
রউফ তালুকদার পদাধিকারবলে তখন বিআইএফএফএলের চেয়ারম্যান। ফরমানুল ইসলাম অফিস থেকে চলে আসার সময় আব্দুর রউফ তালুকদার তাঁকে উদ্দেশ করে বলতে থাকেন, ‘জেলে তাঁকে যেতেই হবে। এই এখলাছ, তুমি ইকবালকে জানাও।’
এখলাছ হচ্ছেন অর্থ বিভাগের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব এখলাছুর রহমান, যিনি কোম্পানিটির পর্ষদে ছিলেন। আর ইকবাল হচ্ছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হাসান। দুজনেই ইতিমধ্যে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন।