25 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

দাবি উঠেছে মুনিয়া হত্যার বিচারের

আরও পড়ুন

নিজস্ব প্রতিবেদক :::

কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়া ‘খুনে’র ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন মুনিয়ার পরিবারের সদস্যরা। একই সঙ্গে মামলার বাদীর নিরাপত্তার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তুলেছেন মোসারাত জাহান মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আনভীরের বিরুদ্ধে মোসারাতকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে তোলেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়া হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচারে বাধা দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে  তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের কাছে মোসারাত হত্যার বিচার দাবি করেন। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

মুনিয়ার বড় বোন অভিযোগ করেন, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবাহানসহ হত্যায় জড়িতদের প্রতি প্রভাবিত হয়ে ছাড় দিয়েছেন তদন্তকারীরা। মামলার আইনজীবী অভিযোগ করে বলেন, রাষ্ট্র, তদন্তকারী কর্মকর্তা এমনকি আদালতকেও ম্যানেজ করে মামলা থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন সায়েম সোবাহান।

সংবাদ সম্মেলনে কোনো কোনো সাংবাদিক কলেজছাত্রী মোসারাতের বিলাসবহুল জীবন নিয়ে প্রশ্ন তুললে নুসরাত জাহান বলেন, ‘আপনাদের প্রশ্ন করার জন্য আমার খারাপ লাগছে না। তবে আপনারা যেসব প্রশ্ন করছেন, তার সিন্ডিকেট হচ্ছে আনভীর।’

নুসরাত জাহান মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, দুই বছর আগে সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে মোসারাত জাহান মুনিয়ার পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে তারা বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় দেখা করতেন এবং সব সময় মোবাইলে কথা বলতেন। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর মধ্যে ২০১৯ সালে মুনিয়াকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বনানীতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন আনভীর। ২০২০ সালে আসামির পরিবার এক নারীর মাধ্যমে ওই প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন। এর পর আনভীরের মা মুনিয়াকে ডেকে ভয়ভীতি দেখান এবং তাকে ঢাকা থেকে চলে যেতে বলেন। পরে কুমিল্লা থেকে ডেকে এনে এ বছরের মার্চে গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কে বাসা (ফ্ল্যাট-বি-৩) ভাড়া নেন আনভীর। এর মধ্যে বোন মুনিয়ার মাধ্যমে বাদী নুসরাত জানতে পারেন, আসামি তাকে বিয়ে করে বিদেশে স্থায়ী হবেন। কারণ দেশে থাকলে আসামির মা-বাবা মুনিয়াকে মেরে ফেলতে পারেন। গত ১ মার্চ থেকে আসামি আনভীর মাঝেমধ্যে ফ্ল্যাটে আসা-যাওয়া করতেন। এর মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল মুনিয়া তার বোনকে ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করে বলেন, আনভীর তাকে বিয়ে করবে না, শুধু ভোগ করেছেন। সে তাকে ধোঁকা দিয়েছে। যে কোনো সময় তার বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তারা (বাদী নুসরাতের পরিবার) যেন দ্রুত ঢাকায় আসেন।এজাহারে আরও বলা হয়, নুসরাত আত্মীয়স্বজন নিয়ে গুলশানের বাসায় পৌঁছে দেখেন ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। পরে মিস্ত্রি ডেকে তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকার পর তিনি দেখেন- তার বোন ওড়না পেঁচিয়ে শোবারঘরের সিলিংয়ে ঝুলে আছে। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। আলামত হিসেবে আসামির সঙ্গে ছবি, আসামির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে লেখা ডায়েরি ও তার ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোন নিয়ে যায় পুলিশ।

প্রসঙ্গত, মুনিয়া হত্যার বিচারের দাবিতে যতোটা সরব ছিলো তার পরিবার, ততোটাই নিরবতা পালন করে দেশের সবকটি গণমাধ্যম। প্রবাসী গণমাধ্যম  ‘নাগরিক টিভি’র বার্তা প্রধান নাজমুস সাকিব মুনিয়া হত্যার দাবিতে দীর্ঘদিন থেকে সোচ্চার ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর