25.3 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

৩০ হাজার টাকার রাউটার ৫ লাখ ৮০ হাজারে কিনেছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড

ল্যাপটপের দাম ৪ লাখ ৮৬ হাজার

আরও পড়ুন

নিজস্ব প্রতিবেদক :::

রুপপুরের বালিশকান্ডের পর এবার পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ( আরইবি) কেনাকাটায় নজিরবিহীন অনিয়মের তথ্য ফাঁস হয়েছে। ৩০ হাজার টাকার রাউটার ৫ লাখ ৮০ হাজারে কিনেছে সংস্থাটি। ২৫টি নেটওয়ার্ক রাউটার সরবরাহ করে ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা নিয়েছে ডব্লিউজিএল। প্রতিটি রাউটারের দাম পড়েছে ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সাধারণত  প্রিন্টার, রাউটার এবং লেজার প্রিন্টারের সঙ্গে সফটওয়্যার ফ্রি দেয়া হয়, অথচ এসব সফটওয়্যার  কিনে নেবার মতো মহা-দুর্নীতি সামনে এসেছে।

সংস্থাটির বিরুদ্ধে  নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্নীতি , লোডশেডিং ন্যুনতম  পর্যায়ে রাখায় ব্যর্থতা , গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ দীর্ঘদিনের । এবার কেনাকাটায় পুকুরচুরির বিষয় সামনে এসেছে।

নথি অনুযায়ী, একই ধরনের ২০টি রাউটার সরবরাহ করেছে এইচইএল। প্রতিটির মূল্য নিয়েছে ৩৫ হাজার ৩৯৫ টাকা। এর বাজারমূল্য মানভেদে ৩০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা।

এইচপি ব্র্যান্ডের একেকটি কোর আই ফাইভ ল্যাপটপের দাম  প্রায় ৪ লাখ ৮৬ হাজার টাকা নিয়েছে ডব্লিউজিএল। অথচ জেনুইন অপারেটিং সিস্টেমসহ এই মানের ল্যাপটপের বাজারমূল্য ৯০-৯৫ হাজার টাকা। আর এইচইএল সরবরাহ করেছে ১ লাখ ১ হাজার ৭৬১ টাকা করে ৩৮টি ল্যাপটপ।

অন্যদিকে, ডব্লিউজিএল দেড় টনের গ্রি ব্র্যান্ডের ২৯টি এসি সরবরাহ করে দাম নিয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার টাকা করে। প্রকৃতপক্ষে এর বাজারমূল্য ৬৫-৭০ হাজার টাকা। তবে অন্যান্য ব্র্যান্ডের দেড় টনের এসির দাম এর প্রায় অর্ধেক। এইচইএল ২০টি এসি সরবরাহ করে প্রতিটির দাম নিয়েছে ৩৬ হাজার ৮০০ টাকা।

এসব মালামাল কেনাকাটায় অনিয়ম ডাকতে  ‘শুভংকরের ফাঁকির’ কৌশল হিসেবে প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার সরবরাহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ পণ্যের সাথে অধিকাংশ সফটওয়্যার ফ্রি।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কম্পিউটারের সঙ্গে উইনডোজ অপারেটিং সিস্টেমের একটি নিবন্ধনকৃত সফটওয়্যার সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু যে ব্র্যান্ডের কম্পিউটারটি কেনা হয়েছে তাতে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনকৃত ওই সফটওয়্যার ফ্রি দিয়ে থাকে। একইভাবে স্লিপ প্রিন্টার, রাউটার এবং লেজার প্রিন্টারের সঙ্গে সফটওয়্যার কেনা বাবদ ব্যয় দেখানো হলেও বাস্তবে সেখানে যে সফটওয়্যার ব্যবহার হয়, তাও প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রি সরবরাহ করে।

দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জন্য আরইবি বিভিন্ন সময়ে যেসব মালপত্র কিনে থাকে, সেগুলোর সব তথ্য যাচাই করলে বিপুল পরিমাণ অনিয়ম দুর্নীতির চিত্র উঠে আসবে বলে অভিযোগ করেছেন আরইবির  কর্মকর্তারা।

যোগাযোগ করা হলে আরইবির চেয়ারম্যান অজয় কুমার চক্রবর্তী  বলেন, তিনি একটা জরুরি মিটিংয়ে আছেন। আরইবির সদস্য (বিতরণ ও পরিচালন) দেবাশীষ চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

এ বিষয়ে দেবাশীষ চক্রবর্তীও কিছু বলতে চান নি।

জানা যায়,  প্রকল্পের পরিচালক ছিলেন আরইবির বর্তমান পরিচালক (কারিগরি) মো. রফিকুল ইসলাম। জানতে চাইলে  তিনি  বলেন, ‘দরপত্রের মাধ্যমে মালপত্রগুলো কেনা হয়েছে, যেখানে অনেক বেশি প্রতিযোগিতা হয়েছিল। এখানে কিছু আইটেমের দাম বেশি মনে হলেও কোনো কোনো আইটেমের দাম বাজারদরের চেয়ে অনেক কম। যেমন একটা মিটার স্থাপন করতে ন্যূনতম ৩০০ টাকা দরকার। কিন্তু এখানে ঠিকাদার এই কাজটি মাত্র সাড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৫ টাকায় করেছে। যথাযথ নিয়ম মেনে সব আইটেম মিলে সর্বনিম্ন দরদাতাকেই কাজ দেওয়া হয়েছে। এখানে কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি হয়নি।’

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর