25.2 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

ঘষামাজা করে নিজের নাম কাটলেন কক্সবাজারের সাবেক ডিসি নুরুল আমিন

আরও পড়ুন

নিজস্ব প্রতিবেদক :::

মামলার বাদির স্বাক্ষর জাল, নথি জালিয়াতি করে নিজের নাম কাটান কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক নুরুল আমিন। দুদকের তদন্তে ধরা পড়েছে ক্ষতিপূরণের ২৩ কোটি টাকা নিয়ে  প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের মতো এমন নজিরবিহীন অনিয়ম।

বাদীর স্বাক্ষর এবং নথি জালিয়াতি করে আসামীর নাম বাদ দেয়ার অভিযোগে কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন ও সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে সোমবার (১ জুলাই) কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ মুনসী আবদুল মজিদের আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন দুদকের কক্সবাজার সম্বন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন।

মামলায় অপর আসামিরা হলেন, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী মোস্তাক আহমেদ, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. জাফর আহম্মদ। আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির বেদারুল আলম।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে কক্সবাজারের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ জাফর আলমসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে মহেশখালীর এক ব্যক্তি। মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অধিগ্রহণকৃত চিংড়ি জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের ২৩ কোটি টাকা প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এ মামলাটি দায়ের করা হয়।

মামলার পরপরই কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয় এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতায় এক নাম্বার আসামি জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনকে বাদ দিয়ে দু নাম্বার আসামি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ জাফর আলমকে এক নাম্বার আসামি দেখিয়ে এবং ২৮ জন আসামির স্থলে আরজিতে কাটাছেড়া ও ঘষামাজা করে ২৭ জন জন্য দুদক প্রধান কার্যালয়ে জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার দেখিয়ে তদন্তের মামলাটি পাঠান ।

দুদকের তদন্তে আরো জানা যায় জব্দকৃত এন্ট্রি রেজিস্ট্রারে আসামি হিসেবে প্রথমে মো. রুহুল আমিন, জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার গং লেখা ছিল। পরবর্তীতে মো. রুহুল আমিন গং এর নামের উপর সাদা ফ্লুইড দিয়ে (একটু উপরে) মোঃ জাফর আলম গং লেখা হয়েছে। ওকালতনামায় এডভোকেট মোস্তাক আহম্মেদ চৌধুরী কর্তৃক স্বাক্ষরিত পাতায় মো. রুহুল আমিন, জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার গং-২৮ জন এর স্থলে ফ্লুইড দিয়ে ঘষামাজা করে মো. জাফর আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার গং-২৭ জন করা হয়েছে।

পাশাপাশি মামলার বাদী এ.কে.এম কায়ছারুল ইসলাম চৌধুরী বনাম মো. রুহুল আমিন, জেলা প্রশাসক গং-বিবাদী এর জায়গায় মো. রুহুল আমিনের উপর কলম দিয়ে ঘষামাজা করে মো. জাফর আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গং-বিবাদী উল্লেখ করা হয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার মামলার বাদী কায়ছারুল ইসলাম চৌধুরীর বক্তব্য পুনরায় ২০০ ধারায় লিপিবদ্ধ করে নিজে ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর স্বাক্ষর করেছেন এবং বাদীর স্বাক্ষরের জায়গায় জালিয়াতির মাধ্যমে কায়ছারুল ইসলাম চৌধুরীর জাল স্বাক্ষর করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়েছে, মামলার আর্জির প্রথম তিন পাতায় বাদী কায়ছারুল ইসলাম চৌধুরীর নামে জাল স্বাক্ষর দেয়ার বিষয়টি সিআইডির হস্তলিপি বিশারদ এর মতামতে প্রমাণিত হয়েছে। মামলার আরজির ৩টি পাতা পরিবর্তন ও অবশিষ্ট পাতায় কাটাছেড়া, ঘষামাজা করে দন্ডবিধির ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ৪৭৭ ক, ১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় তারা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর