26.3 C
Dhaka
Friday, October 3, 2025

হাজার মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো

আরও পড়ুন

হারুনার রশীদ বুলবুল, কেশবপুর

কেশবপুরে হাজারো মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। আর এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ পারাপার হয়ে থাকে বিভিন্ন অঞ্চলে। জানা গেছে, যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার ও সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার ১০ টি গ্রামের প্রায় দেড় লাখ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে কপোতাক্ষ নদের ত্রিমোহিনীতে একটি সেতু নির্মাণ করার দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসি। কিন্তু আজও তাদের সেই দাবি পূরণ হয়নি। ফলে এলাকাবাসী নিজেদের উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে একটি সাঁকো তৈরি করেছে। সেই বাঁশের সাঁকোটিও এখন যাতায়াতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। মাঝে মধ্যে সাইকেল, মোটরসাইকেল, মোটরচালিত ভ্যান ইত্যাদি পারাপারের সময় নদীতে পড়ে যায়।

গত সোমবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কপোতাক্ষ নদের তীরে অবস্থিত কেশবপুর উপজেলার পুরনো ত্রিমোহিনী বাজারের চারপাশে অবস্থিত একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি বালিকা বিদ্যালয়, একটি ফাজিল মাদরাসা ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সোনালী ব্যাংকের একটি শাখাও রয়েছে। এ বাজারে কেশবপুরের চাঁদড়া, বেগমপুর, মির্জানগর, সাতবাড়িয়া, বরণডালি, কলারোয়ার দেয়াড়া, যুগিখালী, সলিমপুর ও কামারালী গ্রামের মানুষ বিভিন্ন পণ্য এনে বিক্রি করে। কলারোয়ার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা ত্রিমোহিনী বাজারের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করতে আসে। এছাড়াও প্রতি বছর ত্রিমোহিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হয়। ত্রিমোহিনী বাজারে ১৮৫টি দোকান রয়েছে। নদের ওপারের অনেকেই এ বাজারে ব্যবসা করে। তা ছাড়া দুইপারের কৃষকের কৃষিপণ্যের বেশির ভাগই বিক্রির জন্য বাজারে আনা হয়।

কলারোয়ার চার গ্রামের মানুষ কপোতাক্ষ নদের ঝুঁকিপূর্ণ ওই বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে হাঁটবাজারে বিভিন্ন পণ্য আনা-নেওয়াসহ যাতায়াত করে। সাঁকোর ওপর দিয়ে মালামাল আনতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের বিপাকে পড়তে হয়। তা ছাড়া স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদেরও সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়।

আলমগীর হোসেন, আব্দুল খালেক, আব্দুর রহিম, মনিরুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, রবিউল ইসলামসহ ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা ব্যবসা করি প্রতিদিন জীবনের ঝুকি নিয়ে এপার ওপার চলাচল করতে হয় আমাদের।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে যায়। বাজারটি অনেক পুরনো হলেও কপোতাক্ষ নদের ওপর সেতু নির্মাণের আশ্বাস আজও মেলেনি। এ কারণে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে।

ত্রিমোহিনী বাজার কমিটির সভাপতি বলেন, বাঁশের সাঁকোটি এলাকাবাসী নিজেদের উদ্যোগে তৈরি করেছে। সেটিও এখন ঝুঁকিপূর্ণ। ঝুঁকির ভেতর দিয়েই এলাকার মানুষকে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

ত্রিমোহিনী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল বাসার বলেন, কপোতাক্ষ নদের ওপর সেতু নির্মাণ করা হলে সহজে ওপারের শিক্ষর্থীদের এপারে এসে লেখাপড়া করতে সুবিধা হবে।

ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আনিছুর রহমান জানান, কপোতাক্ষ নদের ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন দাবি করে আসছে। ওই সাঁকো পারাপারের সময় অনেকে আহত হয়েছেন। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণের পাশাপাশি সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানান।

এব্যাপারে উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ত্রিমোহনীর কপোতাক্ষ নদের ওপর ব্রিজ নির্মাণ করার বিষয় নিয়ে মাপযোগ করা হয়েছে অনেক বার ।কিন্তু যশোর-সাতক্ষীরার দুই জেলার রশি টানা টানিতে বাধাগ্রস্ত হয়ে রয়েছে। কপোতাক্ষর নদের উপর একটি সেতু নির্মিত হলে কেশবপুর ও কলারোয়া উপজেলার মানুষের জীবনযাত্রা পাল্টে যাবে। এলাকাবাসি ওই সেতুটি নির্মাণের জন্য স্থানীয় এমপিসহ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এই বাংলা/এমপি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর