নিজস্ব প্রতিবেদক :::
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সাথে অসদাচরণ ও মারধরের অভিযোগে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছে বাঁশখালীর নির্বাচনী কর্মকর্তা। প্রার্থী মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ দায়ের করতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে নির্দেশনা দেবার পর আগামীকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের আদালতে এই মামলা করা হবে।
বাঁশখালী আসনের নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান – চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের উপর হামলা – হুমকি প্রদান করায়- নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পর আগামীকাল মঙ্গলবার সিজিএম আদালতে সকাল ১০ টার সময় মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বাঁশখালী নির্বাচন কর্মকর্তা। এরআগে এমন অভিযোগে নির্বাচনী অভিযোগ অনুসন্ধানী কর্মকর্তার কাছে জবাব দাখিল করেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমানের প্রতিনিধি।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব (আইন) আব্দুছ সালাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে অভিযুক্ত প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেবার পর মামলা প্রস্তুতি নেয় বাঁশখালীর নির্বাচনী কর্মকর্তা।
নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম-১৬ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী গত ৩০ নভেম্বের ব্যাপক শোডাউন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে আসেন। এসময় তিনি তার সঙ্গীদের নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।এ নিয়ে প্রার্থীকে সাংবাদিক নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করার বিষয়ে প্রশ্ন করলে গালিগালাজ ও মারধর করেন। ওই প্রার্থী নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৮(খ) এর বিধান লঙ্ঘন করেছেন মর্মে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি কমিশনকে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালী আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে আদালতে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মামলা করবেন।
জানা যায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মনোনয়ন ফর্ম জমা দিতে গেলে সাংবাদিকদের একটি পক্ষ তাকে লক্ষ্য করে কটুক্তি করেন। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে বের হবার সময় একটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক প্রতিবেদক কার্যালয়ের সামনেই তাকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান। একই দিন আদালত চত্বরে সহস্রাধিক দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন চট্টগ্রাম -৮,৯,১০,১১,৫,৪ আসনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী, একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী। সুপ্রিম পার্টি ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীও সহস্রাধিক অনুসারীদের সাথে নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে আসেন।
বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ সবচেয়ে কম সংখ্যক নেতাকর্মী (৯ জন) নিয়ে আদালত চত্বরে গিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্র দ্বারা আক্রান্ত হন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে হট্টগোল এড়িয়ে নিজের গাড়িতে করে আদালত প্রাঙ্গন ত্যাগ করতে গেলে সাংসদের গাড়ি আটকে রেখে লাথি মারার ঘটনাও ঘটে।
জানতে চাইলে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের প্রশ্ন করার অধিকার আছে। কিন্তু সবচেয়ে কম সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে গিয়ে আমি পরিকল্পিতভাবে আক্রান্ত হয়েছি। কোন সাংবাদিক সংসদ সদস্যকে ‘ চোর’ কিংবা বিকাশ এমপি বলে চিৎকার চেঁচামেচি করার নজির নেই। ভিডিও ফুটেজ দেখলে দিনের আলোর মতো পরিস্কার হবে সেদিন কে গণমাধ্যমকর্মীর সাইনবোর্ড ব্যবহার করে আমাকে এবং আওয়ামী লীগকে গালাগাল করেছে ?
মোস্তাফিজুর রহমান আক্ষেপ করে বলেন, পরিকল্পিত হট্টগোল তৈরি করা হয়েছে, ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি আমি। চট্টগ্রামের বাঁশখালী এলাকাটি এক সময় জামাত অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। আদালত চত্বরে সেদিন বেশ কিছু জামাত শিবির কর্মীর উপস্থিতির কথা আমি জানতে পেরেছি। প্রশাসনের উচিত তারা কারা সেটি তদন্ত করে দেখা। ‘