দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকার প্রার্থী মোতাহারুল ইসলামের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনকে প্রত্যাহার করার নির্দেশনা দেয় নির্বাচন কমিশন। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নেজামের চেয়ারে বসানোর প্রস্তাব পাঠান ঢাকা। সেই প্রস্তাবে ওসি পটিয়া হিসেবে তিন কর্মকর্তার নাম দেয়া হয়েছে। মোহাম্মদ হাবিব, মোহাম্মদ জসিম ও আনসারুল হক – এই তিন কর্মকর্তার একজনকে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিতে সুপারিশ করা হয়েছে।
চকরিয়ার খুটাখালীর চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী মৌলবী আক্তার কামালের নিকটাত্মীয় আনসারুল করিমকে পুলিশের এসআই থেকে ওসি পর্যন্ত পৌঁছুতে কোন বেগ পেতে হয় নি। চাকরি জীবনে অনেক অভিযোগ, মামলা কোন কিছুই থামাতে পারে নি তাকে৷ চকরিয়ার মুক্তিযুদ্ধ কমান্ডার আনোয়ারুল হোসন বাঙালির ছেলে খাদ্য পরিদর্শক তারেক বাঙালীতে তুলে নিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানোর অভিযোগও ছিলো তার বিরুদ্ধে।
২০১৪ সালে বিএনপি জামাতের সরকার বিরোধী আন্দোলনে ঝাউতলা এলাকা থেকে আটক হওয়া দুই কিশোরের ‘অর্থের যোগানদাতা’ হিসেবে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসিয়ে দেয়া হয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আনোয়ার বাঙ্গালীর এই ছেলেকে। পেট্রোল বোমার অর্থ যোগানদাতা হিসেবে এই সরকারি কর্মকর্তা জেল কেটেছেন ২ মাস সতের দিন। চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হন তারেক বাঙালী। পুরো ঘটনার নেপথ্য কারিগর হিসেবে উঠে আসে খুলশী থানার তৎকালীন সেকেন্ড অফিসার আনসারুল করিমের নাম। আনোয়ার হোসেন বাঙালির স্ত্রী তার ছেলে খাদ্য পরিদর্শক তারেক বাঙালীকে ফাঁসানোর ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছিলেন আনসারুল করিমের বিরুদ্ধে।
চট্টগ্রামে খুলশী থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনসারুল করিমের বিরুদ্ধে মামলা করেন এনায়েত বাজার এলাকার আরেক ব্যবসায়ী শ্রী শচীন্দ্র লাল দে। শচীন্দ্র লাল দে ২০০৮ সালে সীতাকুণ্ড থেকে সংসদ নির্বাচন করেছিলেন। আদালত সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় এ মামলা তদন্তের জন্য পাঠানোর নির্দেশ দেন ।মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় খুলশী থানার সদ্য বিদায়ী ওসি ইফতেখার হোসেন বাদী শচীন্দ্র লাল দে’কে থানায় ডেকে পাঠান। এসময় ওসির কক্ষে বসা অবস্থায় তিনি এসআই আনসারুরল করিমকে ডাকেন। তখন অনসারুল করিম এসে বলেন বাদী ওসির বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ করায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করতে তার ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, ওই টাকা এখনই বাদীকে পরিশোধ করতে হবে। এ জন্য তাকে প্রায় এক ঘণ্টা থানায় আটকে রাখা হয়। পরে তার পকেটে থাকা ১২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে শচীন্দ্র লালকে ছেড়ে দেওয়া হয়।আনসারসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির-১৬১ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ এর (২) ধারায় আদালতে মামলা করেছিলেন শচীন্দ্র লাল দে।