25.6 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত দুই মেরুতে

আরও পড়ুন

অশোক দাস, কোলকাতা  :::

বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও রাজনেতিক পরিস্থিতি নিয়ে দুই মেরুতে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনী ব্লিন্কেনের সাথে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক অমীমাংসিতই থেকে গেলো। 

ভারত অবস্থান “খুবই স্পষ্ট করে” যুক্তরাষ্ট্রের সামনে তুলে ধরার বিষয়টিকে বিশ্লেষকরা ব্যাখ্যা করছেন যে আমেরিকা যাতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বেশী চাপ না দেয়, সেই বার্তাই শুক্রবারের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়েছে ভারত।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ইন্দো প্যাসিফিক রাজনীতির ছকে গুরুত্বপূর্ণ গুটি হিসেবে দেখে সামনের নির্বাচনে  গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় অনড় থাকলেও ভারত তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতেই দেখছে বাংলাদেশের রাজনীতিকে। বিশ্লেষকদের মতে,  বাংলাদেশে বড় অংকের চীনা বিনিয়োগ এ তিন দেশের ভূ রাজনৈতিক সম্পর্কের পথের কাঁটা। 

বাংলাদেশের রাজনীতি ও জাতীয় নির্বাচনে বিদেশের হস্তক্ষেপকে সমর্থন করছে না ভারত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের ভারত সফরেও এই নীতিতে অনড় থেকে পরোক্ষভাবে সরকারকে সমর্থন করছে ; এমন বিশ্লেষণ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের। 

চীন শুধু বাংলাদেশ নয়  বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করছে। চীনের এই প্রভাব বিস্তার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুবই স্পর্শকাতর। সেজন্যই চীনের বড় অংকের বিনিয়োগ  বৈশিষ্ট্যকে ঘিরে তারা তাদের পররাষ্ট্রনীতিটা বাস্তবায়ন করতে চাইছে। যেটার প্রকাশ বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ঘটছে।

বাংলাদেশের সামনের নির্বাচন অবাধ হওয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক  একটি চাপ নিশ্চয়ই তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেই চাপের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে ভারত। বিশ্লেষকদের মতে,  আস্থার সংকট কাটাতে না পারলে, বিশেষ করে সরকারি দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় যে নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে, ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতায় রেখে সেই জায়গাটাতে ফিরে আসা সম্ভব না।

একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশকে সেদেশের মানুষ যেভাবে দেখতে চায়, সেই ‘ভিশন’কে ভারত কঠোরভাবে সমর্থন জানিয়েছে । ভারতের মকে,  বাংলাদেশের নির্বাচন সেদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সেদেশের মানুষই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরে সন্ধ্যায় যৌথ বিবৃতি জারি করেছে ভারত আর যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে অবশ্য প্রত্যাশিত ভাবেই বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গটি উল্লেখ করা হয় নি। তবে অন্তত এক বছরের বেশি সময় ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরির বিষয়ে সোচ্চার। 

গেল জুলাইয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র  ম্যাথিউ মিলার বলেছিলেন, “আমি বুঝি না কেন কেউ আমাদের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহবানে আপত্তি জানাবে। এর আগে অন্য একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলাম, অন্যান্য দেশ যখন আমাদের সাথে আমাদের নির্বাচনের প্রসঙ্গ তোলে, তখন আমরা এটিকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে গণ্য করি না। আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার সুযোগ হিসেবে আমরা সেই আলোচনাগুলোকে স্বাগত জানাই।”

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের বৈঠক ও সেই বৈঠকে বাংলাদেশ ইস্যুতে  দুটি দেশের দুই মেরুতে অবস্থান ; পরিবর্তনে মুখিয়ে থাকা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পথরেখা নিজস্ব গতি চালিয়ে নিতে উৎসাহিত করবে। 

এইবাংলা /তুহিন 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর