গোপাল হালদার, পটুয়াখালী:
পটুয়াখালী জেলা শহর থেকে মির্জাগঞ্জ উপজেলায় যাতায়াতের প্রধান সড়কটির বেহাল দশা। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, উঠে গেছে কার্পেটিং। যে কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সড়কটি দিয়ে চলাচালকারী মানুষদের।
স্থানীয়রা জানালেন, অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করায় সড়কটির এমন অবস্থা হয়েছে। পটুয়াখালী জেলায় প্রবেশ এবং বের হতে পায়রা সেতুর ওজন পরিমাপক যন্ত্রকে ফাঁকি দিতে অসাধু চালকরা এই সড়কটি ব্যবহার করছে।
ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কের পায়রা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে লেবুখালী-পায়রা সেতু। এ সেতুতে রয়েছে ওয়েটস্ক্রেল। যা পার হয়ে যানবাহনগুলোকে পায়রা সেতুতে উঠতে হয়। আর এতে ৬ চাকার গাড়িতে সর্বোচ্চ ২২টন পর্যন্ত পণ্য নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আর ১০ চাকার যানবাহনে সর্বোচ্চ ৩০ টন, ১৪ চাকার যানবাহনে ৪০ টন, ১৮ চাকায় ৪৭ টন, ২২ চাকায় ৪৯ টন এবং ২৬ চাকায় ৫২ টন পণ্য বহনের অনুমোদন রয়েছে। নির্ধারিত ওজনের বেশি পণ্য বহন করলে প্রথম টনের জন্য পাঁচ হাজার টাকা এবং পরের টনের জন্য ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হয়।
এ কারণ বর্তমানে লেবুখালী সেতুতে যানবাহন না উঠে অতিরিক্ত ওজনের ট্রাকগুলো পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের লেবুখালী-পায়রা সেতুর আগে বাকেরগঞ্জ থেকে মির্জাগঞ্জ হয়ে পায়রাকুঞ্জ দিয়ে ফেরিপার হচ্ছে। এ কারণে মহাসড়কের অধিক ওজনের যানবাহনগুলো এখন আঞ্চলিক সড়কে বেশি চলাচল করে। এর ফলে সড়কটি অধিক ওজনের গাড়ির কারণে এখন খানাখন্দে বেহাল দশা। সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে এ এলাকার বাসিন্দা ও এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন।
অটো চালক পিজুস ওঝা জানান, প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ভাংগা রাস্তার দিয়ে যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে হয়। অনেক সময় গাড়ি উল্টে পড়ে গিয়ে যাত্রীরা মারাত্মকভাবে আহত হয়। রাস্তটির এমনিতেই বেহাল দশা, তার উপর মাল বোঝাই বড় ট্রাক চলাচলে পরিস্থিতি আরও খারাপ করে দিয়েছে।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খান মো. আবু বরকর সিদ্দিকী বলেন, সড়কটি গত বছরও সংস্কার করা হয়েছে। এরপরও ভারী যানবাহন চলাচল করায় এ বছর আবারও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় জেলা শহরের যাতায়াতের প্রধান সড়কটিতে এমন ভোগান্তি আমাদের ব্যথিত করে। আমরা এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি চাই। ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকদফা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। রাতের আধারে এসব যানবাহন চলাচল করছে। তবে সড়ক বিভাগ সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এ বিষয়ে একটু নজর দেওয়া জরুরি। পাশাপাশি সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে কাজের তদারকি ও মান রক্ষা করার অনুরোধ করছি।
পটুয়াখালী জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন কাজল জানান, অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহন যাতে সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে না পারে সে ব্যাপারে তারা সচেষ্ট রয়েছেন।
আর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিক উল্লাহ বলছেন, সড়কটি সংস্কারে উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। সড়কটি দিয়ে অতিরিক্ত পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
এইবাংলা /নাদিরা শিমু/Ns