তানভীর আহমেদ, আনোয়ারা থেকে ফিরে ::
বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে আগামী ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে আসছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই দিন চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গা প্রান্তে টানেলের উদ্বোধন শেষে আনোয়ারার কেইপিজেড মাঠে জনসভায় যোগ দিবেন তিনি।
আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের কেইপিজেড মাঠেই অনুষ্ঠিত হবে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ইতিহাসে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভা। স্থানীয় সাংসদ ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বডুয়াসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে সমাবেশের জন্য এই স্থানটি নির্ধারণ করেছেন।ইতিমধ্যে কেইপিজেড মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা থেকে আগত নেতা-কর্মীদের বহন করা বাসের জন্য বড় ৪ টি পার্কিং মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে। অর্থনৈতিক জোনের ( কেইপিজেড ) অব্যবহৃত মাঠগুলো সংস্কার করেই পার্কিং জোন করা হয়েছে। সাড়ে নয় লাখ ঘনফুট আয়তনের মাঠ জনসভার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। যা পলোগ্রাউন্ড মাঠের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বড়। নৌকার আদলে দেশের সবচেয়ে বড় মঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে মঞ্চ তৈরীর কাজ প্রায় শেষের পথে । প্রতিদিন ১০০ -১৫০ শ্রমিক মন্ত্র তৈরীর পাশাপাশি সমাবেশ স্থলের আনুষাঙ্গিক কাজে ব্যস্ত রয়েছে ।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সমাবেশের দিন সকাল থেকে মঞ্চে দেশাত্মবোধক গান, নৃত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে। চলবে দুপুর পর্যন্ত।
জনসভাস্থল সম্পর্কে জানতে চাইলে কেইপিজেডের উপ- মহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান বলেন,
” প্রশাসন ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ এই মাঠে জনসভা করার সিন্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে মাঠটি জনসভার উপযোগী করে তোলা হয়েছে এবং বর্তমানে দৃষ্টিনন্দন হয়েছে” ।
প্রধানমন্ত্রীর জনসমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রচারণা ও প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ । দফায় দফায় সমন্বয় সভা করে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ মাঠ পর্যায়ের কর্মী ও সমর্থকদের দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে । প্রধানমন্ত্রীর জনসভা কে স্বাগত জানিয়ে আনোয়ারা- কর্ণফুলী সহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রতিটি ইউনিয়নে আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে । এই সমাবেশ কে সর্বকালের বৃহত্তম সমাবেশ আখ্যায়িত করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন,
” জনসভায় ২০ লাখ মানুষের সমাগম হবে। ”
চলছে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ:
প্রধানমন্ত্রীর জনসভা কে কেন্দ্র করে আনোয়ারা-কর্ণফুলীর পিএবি সড়কের আইল্যান্ড এবং টানেল এর গোলচত্বর নানান রঙ্গে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। এছাড়া আঞ্চলিক সড়ক গুলোতে কার্পেটিং এবং সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ দ্রুত গতিতে চলমান রয়েছে। চট্টগ্রাম শহরসহ উত্তর ও দক্ষিণ জেলার রাস্তার মোড়ে এবং টানেলের আশেপাশে বিলবোর্ড, তোরণ নির্মাণ স্থাপনে রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমেছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। এছাড়া ব্যানার-পোষ্টারিং তো রয়েছেই। এছাড়াও সমাবেশের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার পর থেকে নিয়মিত সমাবেশস্থলের আশেপাশের এলকায় টহল দিতে দেখা গেছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং এএসএফের সদস্যদের।
স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন এবং প্রধানমন্ত্রীর আগমন কে সামনে রেখে কর্ণফুলী -আনোয়ার উপজেলা সহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে চলছে উৎসবের আমেজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে অফিস আদালত সহ সর্বত্রই এখন টানেল এবং টানেল সম্পৃক্ত আলোচনায় ব্যস্ত সবাই।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের ব্যাপক প্রস্তুতি :
কর্ণফুলী এবং আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামীলীগ সূত্রের জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর জনসমাবেশ সফল করতে গত ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরীতে ভূমিমন্ত্রী ও সাংসদ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এর বাসভবনে আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রতিটি উপজেলায় সমাবেশ সফল করতে বর্ধিত সভা করা হচ্ছে।
জনসভার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী বলেন,
” চট্টগ্রামের ইতিহাসে সর্বকালের সর্ববৃহৎ জনসভা আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগ । ভূমি মন্ত্রী ও অত্র সংসদীয় আসনের অভিভাবক সাইফুজ্জামান চৌধুরী সাহেবের সার্বিক দিক নির্দেশনায় প্রধানমন্ত্রীর
জনসমাবেশ সফল করতে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে, ওয়ার্ডে বিরামহীন প্রচারণার পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড সাধারণ জনগণের নিকট তুলে ধরা হচ্ছে। স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল আজ বাস্তব, এই টানেল চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এবং অত্র এলাকার জনসাধারণের জীবনমান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ” ।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে ইতিমধ্যে আমরা প্রতিটা উপজেলায় বর্ধিত সভার আয়োজন করেছি। প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের শতভাগ উপস্থিতির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বঙ্গবন্ধু টানেল এর সুফল অএ দুই উপজেলার বাসিন্দারা সহ চট্টগ্রাম তথা সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ অনুধাবন করবে এবং এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সমৃদ্ধ করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে ।