25 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আরও পড়ুন

নাদিরা শিমু ::

দুই কোটি একুশ লাখ সাত হাজার দুই শ পঁচানব্বই  টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে কাশিমপুর সিনিয়র জেলা সুপার (দুদক) শাহজাহান আহমেদ ও তার স্ত্রী নুরুন নাহার লোাটসের এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। কুমিল্লা জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক পাপন কুমার সাহা বুধবার ( ১৮ অক্টোবর)  মামলাটি দায়ের করেন।

দূর্নীতি দমন আইন  ২০০৪ এর ২৭ (১) ও দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, শাহজাহান আহমেদ ১৯৮৭ বস্ত্র অধিদপ্তরের ড্রাফটম্যান হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে তিনি কুমিল্লা জেলা কারাগারের ডেপুটি  জেলর হিসেবে দায়িত্ব পান। সেই থেকে ২০২০ সালের ২৬ শে জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন কুমিল্লা কারাগারে।  শাহাজাহান আহমেদ কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে সিনিয়র জেল সুপারের দায়িত্ব পালন করার সময়  সেখানে একক আধিপত্য বিস্তার করে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করার অভিযোগ করা হয়েছে।

এজাহার উল্লেখ করা হয়েছে, শাহজাহান আহমেদ তার বৈধ উপার্জিত সম্পদের মধ্যে বাহাত্তর লাখ নয় হাজার দুইশত বাইশ টাকার সম্পদের তথ্য  গোপন করেন। নথি অনুযায়ী তিনি পঁচাশি লাখ একানব্বই হাজার তিনশ পঁচানব্বই টাকার ( ৮৫,৯১,৩৯৫) সম্পদ অর্জন করেছেন। শাহজাহান আহমেদ  অস্থাবর তের লাখ উনিশ হাজার একশ চুরানব্বই টাকা ( ১৩,১৯,১৯৪) সম্পদ উপার্জন করেছেন। ব্যয় ও কর পরিশোধ শেষে তার মোট উপার্জিত সম্পদের পরিমান এক কোটি ত্রিশ লাখ উনিশ হাজার দুইশত তেষট্টি টাকা  হলেও ৫৮ লাখ  দশ হাজার একশত এক চল্লিশ টাকা সম্পদ বিবরণীতে প্রদর্শিত হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে শাহজাহনের বিরুদ্ধে  বাহাত্তর লাখ নয় হাজার দুইশত বাইশ ( ৭২,০৯ ২২২) টাকার সম্পদের তথ্য  গোপন করার তথ্য মিলেছে।

অন্যদিকে, শাহজাহান আহমেদের স্ত্রী পেশায় গৃহিণী। তার মালিকানাধীন এক উনসত্তর লাখ উনসত্তর হাজার দুইশ ষাট( ১,৬৯,৬৯,২৬০) টাকার সম্পদের মধ্যে ৩৪ লাখ চুয়াত্তর লাখ চুয়াত্তর হাজার টাকার সম্পদ বৈধ। অনুসন্ধানে দুদক কর্মকর্তা নিশ্চিত হন  পারিবারিক ব্যয় ও পরিশোধিত কর বাবত তিনি ব্যয করেছেন ১৭ লাখ চৌদ্দ হাজার দুইশ ৩৭ টাকা। তিনি তার মোট উপার্জিত সম্পদের মধ্যে  এক কোটি আট চল্লিশ লাখ আটানব্বই হাজার তিয়াত্তর (১,৬৯,৯৮,০৭৩) টাকার সম্পদ গোপন করেছেন।

এভাবে স্বামী- স্ত্রী দুজন মিলে দুই কোটি একুশ লাখ সাত হাজার দুইশত পঁচানব্বই টাকার সম্পদ গোপন করেছেন।

অনুসন্ধানে উঠে আসে  কারাগারের পুকুরের মাছ বিক্রি, উৎপাদন বিভাগে উৎপাদিত পণ্যের টাকা আত্মসাৎ, টাকার বিনিময়ে কারারক্ষী নিয়োগ, বন্দি নির্যাতন করে অর্থ আদায়, কোয়ারেন্টিনে থাকা বন্দিদের অবৈধ সুবিধা প্রদান, কারা ক্যান্টিনে নগদে পণ্য বিক্রি করে লভ্যাংশ আত্মসাৎ, কারা হাসপাতালে সুস্থ লোককে অসুস্থ দেখিয়ে ভর্তি রেখে টাকা আদায়, সিট ও মোবাইল বাণিজ্য ইত্যাদি অনিয়মের মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করেছে সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ।

জানা যায়,  বন্দি নির্যাতনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও হয়েছিলো । এ ছাড়া বন্দি নির্যাতনের কয়েকটি ঘটনায় তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। দুদক তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা ও টাঙ্গাইলে শাহাজাহানের স্ত্রী নুর নাহার লোটাসের নামে একাধিক বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ি ও কয়েকশ বিঘা কৃষি জমি রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর