25.3 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

বাবার লাশ আট টুকরো করা ছেলে গ্রেফতার

আরও পড়ুন

নাদিরা শিমু, চট্টগ্রাম ||

চট্টগ্রামে বাবাকে খুনের পর লাশ আট টুকরো করে মরদেহ লুকিয়ে রাখার ঘটনায়  পলাতক ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারের পরে  তাঁকে সঙ্গে নিয়ে  খণ্ডিত মাথা উদ্ধারে অভিযান চালায় পিবিআই।

ঘটনার পর থেকে পরিচয় গোপন করে সে ঢাকায় একটি কারখানায় কাজ নিয়েছিলো।  আজ শনিবার (৭ অক্টোবর)  এসব তথ্য জানিয়েছেন পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান।

গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার হাজারীবাগের একটি ট্যানারি কারখানা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়  যুবকের ( নিহতের ছোট ছেলে) নাম সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীর (৩০)।

পিবিআই বলছে, খুনের পর পালিয়ে ঢাকায় একটি কারখানায় পরিচয় গোপন রেখে কর্মরত ছিলেন জাহাঙ্গীর। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি কোনো ধরনের ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করতেন না।

পিবিআই কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস খান বলেন, গ্রেপ্তারের পর আজ শনিবার সকালে গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীরকে চট্টগ্রামে আনা হয়। এরপর তাঁকে নিয়ে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় তাঁর বাবার কাটা মাথার সন্ধান করছে পিবিআই।

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর হাজারীবাগে একটি ট্যানারিতে সুমন নাম উল্লেখ করে চাকরি নেয়। পুলিশ যাতে কোনোভাবে তাকে শনাক্ত করতে না পারে, সে জন্য ডিজিটাল ডিভাইস থেকে নিজেকে দূরে রেখেছিল। পরে আমরা ঢাকা পিবিআইয়ের সহযোগিতায় টানা ৩৬ ঘণ্টা ধরে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তাকে শনাক্ত করতে অভিযান চালিয়েছি।’

ইলিয়াস খান আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে আমরা হাজারীবাগের ট্যানারিতে তার অবস্থানের বিষয়ে নিশ্চিত হই। গ্রেপ্তারের সময় জাহাঙ্গীর নিজেকে সুমন এবং বাড়ি মীরসরাই উপজেলায় বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু আমাদের কাছে তার ছবি আছে। ছবি, এনআইডি দেখানোর পর নিজেকে আর আড়াল করতে পারেনি জাহাঙ্গীর।’

এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নগরীর পতেঙ্গা বোট ক্লাবের অদূরে ১২ নম্বর গেটে একটি খালের পারে পাওয়া ট্রলিব্যাগের ভেতর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির হাত, পাসহ শরীরের খণ্ডিত আটটি অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

এই মামলাটি পিবিআই ছায়া তদন্ত চালিয়ে উদ্‌ঘাটন করেন নিহত ব্যক্তি চট্টগ্রামে বাঁশখালী উপজেলার কাতারিয়া ইউনিয়নের গ্রামের বাসিন্দা মো. হাসান (৬১)। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম, বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান ও জাহাঙ্গীরের স্ত্রী আনারকলিকে গ্রেপ্তার করে। পলাতক ছিলেন নিহতের ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর। এঁদের মধ্যে মোস্তাফিজুর ও আনারকলি হত্যায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

নিহতের বড় ছেলে মোস্তাফিজুর আদালতে জানান, ভিটেবাড়ি বিক্রির হুমকি দেবার কারণে বাবাকে পরিকল্পিতভাবে  হত্যার পর লাশ ৮ টুকরা করেন ছেলেরা।

তিনি জানান, তাঁর বাবা ২৮ বছর ধরে নিরুদ্দেশ ছিলেন। দেড় বছর আগে বাড়িতে ফিরে এসে তিনি তাঁর সম্পত্তি বিক্রির পাঁয়তারা করেন। এতে তাঁরা বাধা দেন। কিন্তু কথা না শোনায়, পরে দুই ভাই মিলে তাঁকে হত্যার পর লাশ টুকরো টুকরো করে বস্তা, লাগেজ ও স্কুল ব্যাগে ভরে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর