25 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

জন্মদিনের ঠিক নাই, খালেদা জিয়া মরে গেলেই ভালো

আরও পড়ুন

যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি :::

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজনীতিতে নাক গলাচ্ছেন। কূটনীতিক শিষ্টাচার মানছেন না। কথায় কথায় নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখাচ্ছেন। নিষেধাজ্ঞা আমরাও দিতে জানি। অচিরেই সেটির প্রমাণ পাবেন।

সোমবার (২অক্টোবর)  বিকেলে সেন্ট্রাল  লন্ডনের একটি কমিউনিটি হলে অনুষ্ঠিত  নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। যুক্তরাজ্য সফররত  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনায় যোগ দেন।

স্যাংশন নিয়ে প্রবাসীদের চিন্তা না করতে এ সময় আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। বলেছেন, আপনাদেরও বলবো স্যাংশন-ট্যাংশন নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। দেশ আমাদের, আমাদের দেশটাকে আমরাই গড়ে তুলবো। কারও মুখাপেক্ষী হতে হবে না। বেশি স্যাংশন দিলে আমরাও স্যাংশন দিতে পারি। আমরাও দিয়ে দিবো।

সরকার প্রধান আরও বলেন, ‘ আমরা দেখি, রোজ আন্দোলন করবে, সরকার উৎখাত করবে। আলটিমেটাম পেলাম, ১০ ডিসেম্বর… ডাকঢোল পিটালো। কেউ ঘাবড়ে গেলো, কেউ ভয় পেলো; আমি বললাম ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ১০ ডিসেম্বর আসলো, গ্যাস বেলুনের গ্যাস চুপসে গেলো। এখনও প্রতিদিন ধমক শুনি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, আমাদেরই করা ডিজিটাল বাংলাদেশ দিয়ে আমাদেরকেই উৎখাতের চক্রান্ত চলছে। ‘

এক এগারো সময়কালের স্মৃতিচারন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,  ‘ তত্বাবধায়ক সরকারের সময় এক প্রকার জোর করে দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র গিয়েছিলাম। সেখান থেকে লন্ডনে আসি। অনেক যুদ্ধ করে লন্ডন থেকে বাংলাদেশে ফিরেছিলাম। সে সময়  যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রবাসীরাও আমার সাথে দেশে ফিরেছেন। তারা আমাকে একা ছাড়েন নি। ‘

তিনি বলেন, এই যে আপনাদের আত্নত্যাগ দেশের জন্য সেটা আমরা সবসময় স্বীকার করি। আপনাদের পাঠানো রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতিতে বিরাট ভুমিকা রাখে। ফোর জির যুগে এখন বাংলাদেশ, সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোন। তের কোটি মানুষ এখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। সতের কোটি মানুষের দেশ, আটারো কোটি সিম ব্যবহার হয় বাংলাদেশে। কাজেই সবার হাতে হাতে ডিজিটাল ডিভাইস রয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচন আমরাই করতে পারবো।

তিনি বলেন,  এক-এগারোতে যখন আমাকে জেলে দিল, কোন কাজ নেই, জেলে বসে বসে লিখতে শুরু করি, যদি কখনো ক্ষমতায় যাই কী কী করব। যার ফলে আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভিশন ২০২১ নির্বাচনী ইশতেহারে নিয়ে এসেছিলাম। আজ আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজ করছি। ‘

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ ভোটের সংস্কারগুলি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই করেছিলো। নির্বাচন কমিশন গঠন করার আইন আমরা করে দিয়েছি। ছবিসহ ভোটার তালিকা আমরা করে দিয়েছি৷ জাতীয় পরিচয় পত্র করে দিয়েছি ।  শুধু যুক্তরাজ্য নয়, সারা বিশ্বে আমাদের প্রবাসীরা যাতে পাসপোর্ট দিয়ে ব্যাংকের একাউন্ট খুলতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ‘

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটা খেলা শুরু হয়েছে, স্যাংশন। কথায় কথায় স্যাংশন, কে কাকে স্যাংশন দেয়, সেটা আমার প্রশ্ন। আমি স্পষ্ট করে একটা কথাই বলছি, যাদের দিয়ে সন্ত্রাস দমন করলাম, জঙ্গিবাদ দমন করলাম তাদের ওপরে স্যাংশন, এটা কোন ধরনের কথা? তখন কি জঙ্গি আর সন্ত্রাসী থাকবে বাংলাদেশে। আমি সবাইকে বলে দিয়েছি, এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই। ‘

খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেবার বিষয়ে তিনি বলেন, তার জন্মের ঠিক নেই। একবার ১৫ আগস্ট, একবার ১৯ শে আগস্ট জন্মদিন পালন করে। বয়সও হয়েছে,  তার বেঁচে থেকে কি হবে, মরেই যাক। মরে যাওয়াই ভালো। 

সোমবার (২ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টা থেকে সেন্ট্রাল লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার এলাকার ম্যাথডিস্ট চার্চ হলে সভাস্থলের ভেন্যু খুলে দেওয়া হলে সিকিউরিটি চেকিং পেরিয়ে একে একে সভাস্থলে প্রবেশ করতে শুরু করেন নেতাকর্মীরা। এবারে প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ব্যাপক জনসমাবেশ করতে বেশ কয়েক দিন ধরে প্রস্তুতি নেয় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ। লন্ডনের বাইরের দূরদূরান্তের শহর ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকেও জড়ো হয়েছিলেন নেতাকর্মীরা। তবে হলের ধারনক্ষমতার (১৫০০ জন)  বাইরে প্রবেশ করতে দেয়া হয় নি ।

এরআগে, লন্ডনে চার দিনের এই যাত্রাবিরতিতে যুক্তরাজ্যের শীর্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে শেখ হাসিনা। সোমবার শুরুতে হোটেল তাজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন উইম্বলডন, এফসিডিও’র প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ। এসময় দু’দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট নানা ইস্যুতে আলোচনা করেন তারা। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন হাউজ অব লর্ডসের সদস্য লর্ড জিতেশ গাধিয়া। তিনি কনজারভেটিভ পার্টির সদস্য ও ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের সভাপতি।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছান। ১৭-২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে অন্যান্য উচ্চপর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগদানের পর নিউইয়র্ক থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছেন শেখ হাসিনা।প্রধানমন্ত্রী ৩ অক্টোবর রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে (লন্ডন সময়) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের (বিজি ২০৮) একটি ফ্লাইটে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন এবং ৪ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টায় (বাংলাদেশ সময়) হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর