নিয়াজ তুহিন :::
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আলোচিত সচিব খালেদ মাহমুদকে বদলির তিন সপ্তাহে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পুরোনো আদেশ বাতিল করা হয়েছে। (৭ই আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে তার বদলি আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। যদিও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব হিসেবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ৩০ শে জুলাই যোগদান করেছেন শহিদুল ইসলাম।
নথি অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যোগদান করার পর রবিবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে যোগ দেবার নির্দেশনা ছিলো শহিদুল ইসলামের। ২রা আগস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মাহবুব আইরিন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে শহিদুল ইসলামের প্রেষণে চসিকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। একই প্রজ্ঞাপনে নতুন চসিক সচিব হিসেবে শহিদুল ইসলামকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে বেতন ভাতা চালু করার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছিলো।
রবিবার ও সোমবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে আসলেও দাপ্তরিক কাজ করার সুযোগই মেলেনি তার। দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন নি বদলি হওয়া সচিব খালেদ মাহমুদ। অবশেষে কব্জির জোর দেখালেন খালেদ মাহমুদ। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বদলি আদেশ প্রত্যাহারের জন্য চিঠি ইস্যু করিয়ে ছেড়েছেন তিনি।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে যোগ দেবার পর থেকে পদোন্নতি বাণিজ্য, নিজের মেয়েকে চাকরি দেয়া, কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে অসদাচরণ করার মতো অভিযোগ পাহাড় ডিঙিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর আস্কারায়। গতবছরও তাকে বদলি করার পর সেই আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছিলো। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে এবারও। তবে সেটি ঘটানো হয়েছে প্রশাসনিক রীতি লঙ্ঘন করেই।
হাতে আসা নথি অনুযায়ী নতুন সচিবের পদে বসা শহিদুল ইসলাম স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের যোগদান করার কারণে আগস্ট মাসের এক তারিখ থেকেই তার বেতন ভাতা চালু হয়েছে। কিন্তু পুরোনো সচিব খালেদ মাহমুদ নিজের চেয়ার আঁকড়ে ধরে রাখতে সর্বোচ্চ তদবিরের আশ্রয় নিয়েছেন।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বদলি হবার পর মায়ের মৃত্যুর কারণ দেখিয়ে নতুন কর্মক্ষেত্রে যোগদান করার জন্য দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছিলেন তিনি। এরই মধ্যে বদলি আদেশ প্রত্যাহারের মিশন সফল করেছেন। নতুন কর্মকর্তাকে রুমেই ডুকতে দেয়া হয় নি। এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে দূর্নীতিবাজ চক্রের কব্জির জোর কতখানি সেটি প্রমাণিত হলো। প্রমাণিত হয়েছে দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসেবে তিনি যতখানি দায়ী, সম পরিমান দায়ী সংস্থাটির শীর্ষ কর্তা।’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিবের একই চেয়ারে দুজন কর্মকর্তা।সোমবার বিকেল থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে হাস্যরসের সৃস্টি হয়েছে। তবে কেউ কেউ বলছেন বদলি আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে, কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে তো বলা হয় নি। চসিক মেয়র বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন। ঢাকা থেকে ফেরার পর সেকারণে শেষ খেলার বাঁশি বাজাবেন মেয়র রেজাউল করিম।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সচিবকে অবমুক্ত করার একটি বিষয় রয়েছে। সেটি সম্পন্ন হয় নি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে নতুন চসিকের সচিব হিসেবে শহিদুল ইসলাম যোগদান করেছেন। কিন্তু সিটি করপোরেশনের বর্তমান সচিব খালেদ মাহমুদ যেহেতু চার্জ বুঝিয়ে দেন নি, সেকারনে মন্ত্রণালয় নিশ্চয় নতুন নির্দেশনা দেবেন।
এইবাংলা / তুহিন