কূটনীতিক প্রতিবেদক :::
বাংলাদেশ নিয়ে রাজনৈতিক সঙ্গে সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ‘গণতন্ত্র রক্ষায় সময়োপযোগী ব্যবস্থা’ নিতে ইউনাইটেড ন্যাশনসকে (ইউএন) চিঠি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ আইন প্রণেতা। বৃহস্পতিবার (২৭শে জুলাই) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ কনগ্রেসম্যান ইউনাইটেড ন্যাশনস ‘র এম্বাসেডর লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ডকে লেখা এক চিঠিতে এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এরআগেও বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মান নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের (পেন্টাগন) একজন শীর্ষ কর্মকর্তা এবং একদল কংগ্রেসম্যান। দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে এগিয়ে নিতে এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা জোরদারে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে নতুন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৬ জন কংগ্রেসম্যান এই উদ্বেগ জানালেন।
চিঠিতে সই করেছেন পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের কংগ্রেসম্যান স্কট পেরি, ভার্জিনিয়ার বব গুডসহ ছয় কংগ্রেসম্যান। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, রাজনৈতিক সহিংসতা নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে ইউনাইটেড ন্যাশনসের রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি সভার প্রভাবশালী সদস্য কংগ্রেসম্যান বব গুড, এনা পাউলিনা লুনা, স্কট পেরি, জুস ব্রিচেন, এন্ডু ক্লাইড, রালফ নরম্যান। এই চিঠিতে তাঁরা বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্র রক্ষায় সময়োপযোগী ব্যবস্থা’ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের ছয় মাস আগে দেশটির প্রভাবশালী একদল আইন প্রণেতা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে এমন অভিযোগ তুললেন।
চিঠিতে তারা লিখেছেন, হিউম্যান রাইটস ওয়ার্চ, এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, প্রিডম হাউস, রিপোর্টারস উইথ আউট বর্ডারস’র মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের নেতিবাচক পথচলা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ , বিরোধী রাজনৈতিক দলের উপর নিপীড়নের বিষয়ে স্বচ্ছ তদন্ত করে জাতিসংঘে দেশটির হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের সদস্যপদ বাতিলের আহবান জানান তারা। এছাড়া বাংলাদেশের র্যাপিড একশান ব্যাটিলিয়নের (rab) যে সকল সদস্যদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিষয়ে পুর্নাঙ্গ ও স্বচ্চ তদন্তের ব্যবস্থা করে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা কমিশনে যোগ না দেবার ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানিয়ে তারা বলেন ‘ মানবাধিকার ইস্যুতে গুরুতর অভিযোগের আলোকে এই নেতিবাচক পথচলা জাতিসংঘ কিভাবে মোকাবেলা করবে তার রূপরেখা নির্ধারণের জন্য অনুরোধ করছি।’
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে এগিয়ে নিতে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানবাধিকারকে সহায়তা দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে ছয় আইন প্রণেতা লিখেছেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের খবর যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্বার্থকে বড় ধরনের হুমকিতে ফেলেছে।এশিয়ায় এ বছর বেশ কিছু নির্বাচন আছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি অব্যাহত অঙ্গীকার ও সম্মান বজায় রাখা এবং বাংলাদেশকে দিয়েই এটা শুরু করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
বাংলাদেশে জোরালো ও গর্বের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য আছে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে প্রচারণার সময় সহিংসতা, গণগ্রেপ্তার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় আঘাতে তাঁরা আতঙ্কিত।
তারা বলেন, নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রবণতা উদ্বেগজনক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়তে চান—এমন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তারা।
এইবাংলা /তুহিন /সিপি