:::::তৌহিদ-উল বারী :::::
কোলেপিঠে বড় করা আজকের তরুণ তরুণীরাই ঠেলে দেয় তাদের সেই পিতামাতাকে বৃদ্ধাশ্রম নামের ঠিকানায়, যে পিতামাতাই তাদেরকে দুনিয়ার মুখ দেখিয়েছিলো, পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো এই পৃথিবীর সাথে। শরীরের অক্ষমতা আর বার্ধক্যের ভারে নুয়ে পড়া বৃদ্ধাটিই আজ বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দা হয়। তাহলে কি এই শরীরের অক্ষমতা আর বার্ধক্যই বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর পূর্বশর্ত? নাকি ট্রেডিশন এটাই যে, ৩০-৪০ বছর পরেই আজকের তরুণ-তরুণীদের ঠিকানা সেই আশ্রম?
জানি, আমরা অনেকেই মনে করবো এটিই ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। তাহলে কি ভাগ্যই তার জন্য দায়ী? কতই না প্রশ্ন জাগে এই বৃদ্ধাশ্রম নিয়ে। কিন্তু কই, সেই থেকে আজ অবধি একটা সেকেন্ডের জন্যও ত বৃদ্ধাশ্রম খালি ছিলো না! হ্যা, এভাবেই চলছে সমীকরণের সমাধান। যে সমীকরণে দেখা যায়, এক সময়ে তার পিতামাতাকে পাঠানো সেই তরুণটিও আজ বয়সের ব্যবধানে তার সন্তানদের দ্বারা বৃদ্ধাশ্রমে নির্বাসিত হয়। কারণ এটাই প্রকৃতির নিয়ম, এটাই পরিবেশে ঘটছে রীতিমতো। কারণ প্রকৃতিই তার সঠিক বিচার করে থাকে।
কিন্তু এভাবেই আর কতদিন। কতদিন বৃদ্ধাশ্রমে নির্বাসিত হবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম? তার কি কোনো সমাধান নেই? নাকি নিরব দর্শকের মতো আমরা হাত তালি দিয়ে বৃদ্ধাশ্রমের দৃশ্য দেখবো কিংবা সংবাদপত্রের শিরোনামে পড়তে থাকবো যে, ❝আজ সন্তান তার বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রামে পাঠালো❞ আসলেই কতই না আমাদের আনন্দ লাগে এই দৃশ্য চোখে পড়লে, অথচ সেই মানুষটিই জানে কত দুঃখ-কষ্ট নিয়ে সে বৃদ্ধাশ্রমে নির্বাসিত হয়, যে মানুষটা তার সন্তানদের জন্য কতই না পরিশ্রম করেছে, কতই কষ্টে গড়ে তুলেছে এই সংসার। দিনের পর দিন খাটুনিখেটে গড়ে তুলেছে এ ঘর।
অথচ এই সোনার ঘরটি ছেড়ে আজ তাদের ঠিকানা হয় ইট-পাথরে ঘেরা চার দেয়ালের মাঝে। যে ঠিকানা কেবল তৈরি করে ইটের সাথে বালি, সিমেন্ট মিশ্রিত চারদেয়ালের বন্ধিজীবন। তবুও তাদের এতে সন্তুষ্ট হতে হবে, উপায় নেই তা ছাড়া। কারণ এটাই এখন তাদের শেষ ঠিকানা মৃত্যুর আগ অবধি। হয়তো বার্ধক্য আর পুত্র হারানোর জর্জরিত শোক, আর সবকিছু হারানোর আক্ষেপই এই বৃদ্ধাশ্রম নতুন করে বাঁচতে শিখাবে তাদের।
তবে কেন এই নিষ্ঠুরতার নিয়ম? কেন এই অমানবিকতা? আদৌও কি পারবো না আমরা সেই নিয়ম থেকে বেরিয়ে আসতে? বৃদ্ধাশ্রমে বসবাসকারী প্রতিটি বাবা মায়ের মনে থাকে এক পৃথিবী সমান কষ্ট, হাহাকার। আমরা কি তা বুঝি? আমরা কি বুঝি যে, প্রতিটি বাবা-মায়ের বৃদ্ধ বয়সে যেন তার সন্তানরা তার পাশে থাকে। তারা যেন শেষ বয়সে তাদের সন্তানের সাথে নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটাতে পারে। তাই আমাদের অবশ্যই একটা বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে যে আমরা একসময় বৃদ্ধ হয়ে যাব। আজকে যদি আমরা আমাদের বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসি তাহলে পৃথিবীর এই চিরচারিত নিয়ম অনুযায়ী আমাদের ও সন্তান আমাদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসতে পারে। এভাবেই চলতে থাকলে বৃদ্ধাশ্রম কখনো খালি হবে না, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে নির্বাসিত হতে থাকবে সবাই সেই আবাসনে, আশ্রমে।
অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
viagra lowest price canada
sildenafil australia online