26 C
Dhaka
Thursday, October 2, 2025

‘ ঈদেও রাউজানে ডুকা যাবে না ‘ সন্ত্রাসীদের হুমকি

আরও পড়ুন

::: নিজস্ব প্রতিবেদক :::

ঈদ উদযাপন করতে চট্টগ্রামের রাউজানে যেতে দেয়া হচ্ছে না বিএনপি নেতাকর্মীদের। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সন্ত্রাসীরা হুমকি দিচ্ছে – এমন অভিযোগ করেছেন রাউজান উপজেলা বিএনপির নেতারা।

জানা যায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারসহ রাউজান থানা, পৌর, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পযার্য়ে নেতা কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কোরবানি ঈদের দিন বাড়ীতে না যেতে সন্ত্রাসীরা হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। ১০/১২ মোটর সাইকেলে করে ছাত্রলীগের ২০/৩০ জন সন্ত্রাসীরা এমন হুমকি দিচ্ছে বলে জানা গেছে।

রাউজান থানা বিএনপির সভাপতি জসিমউদদীন চৌধুরী বলেন, ‘ ঈদের সময় গ্রামে বাবা মার সাথে ঈদ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে নেতাকর্মীদের। অনেকে মামলার শিকার হয়ে এলাকা ছেড়েছেন। মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চলে গেছেন। তাদেরকেও হুমকি দেয়া হয়েছে ঈদে বাড়ি না আসার জন্য। রাজনীতির এমন বীভৎস রুপ ইতিপূর্বে দেখা যায় নি। ‘

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন যুবদল নেতা অভিযোগ করেছেন, ‘ অতি উৎসাহী কিছু ছাত্রলীগ কর্মী,  সন্ত্রাসী বাড়ি বাড়ি গিয়ে সতর্ক করে দিয়ে এসেছে,যাতে ঈদে বাড়ি না আসে। ‘

জানা গেছে,  দীর্ঘ চার বছর ধরে রাউজান থেকে বিতাড়িত হবার পর  এলাকায় ফিরতে পারেন নি মুনিরিয়া যুব তবলিগ নামের একটি তরিকত ভিত্তিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাও। অভিযোগ,  সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হওয়া মুনিরিয়া যুব তবলিগের অনুসারীরা রাউজানে ডুকতে পারছেন না ঈদের সময়ও।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,  স্থানীয় একটি ব্যক্তিগত কোন্দলকে রাজনৈতিক রূপ দান করে ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যা থেকে ১৮ এপ্রিল রাত ১০ পর্যন্ত রাউজানের বিভিন্ন জায়গায় মুনিরীয়া যুব তবলীগের ২৫/৩০টি অফিস ভাংচুর, তরীকতপন্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা-ভাংচুর করা হয়। এমন কি নারী ও শিশুসহ লোকজনকে মারধর করে এলাকা ছাড়া করা হয় । এ ব্যাপারে প্রশাসন নির্বিকার থাকায় রাউজান ছাড়া হওয়া মুনিরিয়ার অনুসারীরা রাউজানে ফিরতে পারে নি ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়,  জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের বাইরে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা ফিরতে শুরু করেছে। কিন্তু বিপত্তি ছাত্রদল, যুবদলের নিরীহ নেতাকর্মীদের। ডাবুয়া ইউনিয়নের হিংগলা এলাকার আবদুল মোনাফের ছেলে শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক বর্তমানে ওমানে এবং ফজল হক সৌদি আরবে আত্মগোপনে আছেন। এছাড়া বিধান বড়ুয়া, কামরুল হাসান টিটু দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দী। খোঁজ নিয়ে জানা যায়  ওমানে থাকা আজিজুল হকের সহযোগীরা চট্টগ্রাম নগর ও রাউজানের বিভিন্ন এলাকায় ছদ্মবেশে ঘুরছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সন্ত্রাসী আজিজুল হকের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন আত্মীয় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বিভিন্ন পদে আছেন। আজিজুল হকের সহযোগী মানিক্যা, নুরুল ইসলাম, জহুর মিয়া, সুরমা ফজল, নেজাম, আমির, হলদিয়া ইউনিয়নের এয়াসিননগর এলাকার দুলাল, চিকদাইর ইউনিয়নের দক্ষিণ সর্তা এলাকার বাসিন্দা মৃত আবদুর রহমানের ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম প্রকাশ বাঁচাইয়া, দেলোয়ার, গহিরা দলইনগর এলাকার এখতেয়ার উদ্দিন সুনইক্যা, ৭ নম্বর ইউনিয়নের আমিনুর রহমানের ছেলে শাহ আলম সাহাইয়্যা ও কদলপুরের হারুন চট্টগ্রাম নগরে আত্মগোপনে আছেন।

এছাড়া পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কাগতিয়ার ডাকাত বজল, সন্ত্রাসী জুম্মইয়্যা, বদুমুন্সিপাড়ার রমজান আলী, সহযোগী ফরিদ, মগদাইরের ডাকাত পারভেজ, কদলপুর ভোমরপাড়ারা বাসিন্দা বুয়েট ছাত্রী সাবেকুন নাহার সনি হত্যা মামলার মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোকামেল হায়াত খান মুকি, ডাকাত আলম, পূর্ব গুজরা আধারমানিক এলাকার বাসিন্দা ডাকাত আফজল, বড় ঠাকুরপাড়া এলাকার বাসিন্দা জাহেদ, জসিম, চইক্যা, উরকিরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা সন্ত্রাসী মুন্না চট্টগ্রাম নগর ও রাউজানের বিভিন্ন উপজেলায় আত্মগোপনে ছিলেন। তাদের অনেককেই রাউজানে ফিরতে দেখা গেছে।

জানা যায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী ফজল হক সৌদি আরব চলে গেলেও তাঁ সহযোগীরা চট্টগ্রাম নগর ও রাউজানের বিভিন্ন উপজেলায় ছদ্মবেশে আছেন। পাঁচ বছর আগে নোয়াপাড়া চৌধুরীহাট এলাকায় যুবলীগ নেতা মোবারককে গুলি করে হত্যা এবং ১ বছর আগে নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়াকে হত্যার চেষ্টা চালায় ফজল হকের সহযোগীরা।এরপর বাবুল চেয়ারম্যানকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত ফজল হকের সহযোগী কামরুল হাসান টিটু, সাদ্দাম ও আবছারকে রাউজান থানা পুলিশ বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ আটক করে জেলহাজতে পাঠায়। বর্তমানে ফজল হকের সহযোগী আবু তাহের ও তৈয়ব চট্টগ্রাম নগরে আত্মগোপনে আছেন। এছাড়া দীর্ঘদিন জেলে থাকা সন্ত্রাসী বিধান বড়ুয়া ও ডাকাত আলমও জামিনে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে আজিজুল হক ও র‌্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত ডাকাত আলমকে রাউজানের পাহাড়ি এলাকা থেকে দুবছর আগে গ্রেপ্তার করা হয়। রাউজান থানার তৎকালীন ওসি কেফায়েত উল্লাহর নেতৃত্বে সেই অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ঈদে বাড়ি না ফেরার হুমকির বিষয়টি জানা নেই। ‘

এইবাংলা/ তুহিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর