:: নাদিরা শিমু :::
পারিবারিক কলহের জেরে অপহরণের পর প্রাণ দিতে হয়েছে ছেনোয়ারা বেগমকে। বাঁশখালীর কুকদন্ডি এলাকার শফি আহমেদের স্ত্রী ছেনোয়ারা। গত ১১ ই জুন চট্টগ্রামে সদর নৌ পুলিশ কর্ণফুলীর তীরে লাশ খুঁজে পায় ছেনোয়ারার। তবে তবে কর্ণফুলী থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত নামা লাশটি বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করার পর জানা যায় এটি নিখোঁজ ছেনোয়ারার লাশ।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, ছেনোয়ারা ও তার দশ মাস বয়সী শিশু জুনায়েদকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করেন শফির আপন ভাই আবুল কালাম। আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মা ও শিশুকে। ৮ ই জুন বিকেলে ছেনোয়ারা ও তার দশ মাস বয়সী শিশু জুনায়েদ ঘর থেকে বের হবার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তিনদিন পর তার লাশ উদ্ধার করা হয় । নিখোঁজ থাকার সময় থানায় অভিযোগ করা হলেও, মামলা নেয়া হয় নি। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা রুজু করার চেষ্টা করা হলেও সেখানেও ব্যর্থ হন শফি আহমেদ। পরে আদালতে রিভিউ করার পর মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঘটনার সুত্রপাত ২২ শে মে। কুকদন্ডিকে নিজ ঘরে স্বামী সন্তান নিয়ে অবস্থান করছিলেন শফি। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আবুল কালাম ও তার ছেলেরা ঘরের টিনে উঠে নাচানাচি করতে থাকে। টিন ফুটো করে দেয়। এসময় নিজের ভাই ও ভাতিজার আচরণের প্রতিবাদ করেও কোন সুরাহ করতে পারেন নি শফি। এসময় শফির স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগমকে গাছে সাথে বেঁধে রাখা হয়।
গ্রাম্য সালিশে ( মাসিক মিটিং) শফি আহমেদ প্রসঙ্গটি তোলার পর সেখানে তুলকালাম কান্ড ঘটনা কালাম ও ছেলে । এক পর্যায়ে রাত বারোটার দিকে কালাম ও তার ছেলে ঘুমিয়ে পড়েছে বলে সালিশকারকরা তাদের বাড়ি পৌঁছে দেয়। বাড়ি ফেরার পর উঁত পেতে থাকা কালাম, তার ছেলে ইসতিয়াক, স্ত্রীসহ ছেনোয়ারার উপর লাঠিসোঁটা নিয়ে আক্রমণ করে। সেখানেই দরজা বন্ধ করে সন্ত্রাসীরা বেদম পিটুনি দেয় শফির স্ত্রী ছেনোয়ারা ও দশ মাস বয়সী শিশু জুনায়েদকে। শিশুটির কান্না শুনে গ্রামের মানুষ এগিয়ে আসে। তাদের নিবৃত্ত করে।
শফি আহমেদ বলেন, ‘ আমার ভাই ও তার ছেলেরা সালিশের পর আমার স্ত্রী ও সন্তানকে মারধর করে। চোখের সামনে গলায় ফাঁস দেয়া হয় দশ মাসের শিশুকে। মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে। আহত স্ত্রী ও জুনায়েদকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছিলো। এরই মাঝে ৮ ই জুন বিকেলে চন্দনাইশে মৌলবী বাজার থেকে মা ও ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ ফিরিয়ে দেয়। ‘
আদালতে দায়ের করা মামলার এজাহারে শফি আহমেদ তার ভাই আবুল কালাম, ভাতিজা ইসতিয়াক জামান, শাহিন সুলতানা ( ভাবি), বুলু আক্তার, সাইমন, রফিকুল আলমকে আসামি করেছেন।
বাদি শফি আহমেদ এজাহারে বলেন, অনেক খুুুজাখুঁজি করে তাদের পাওয়া যাচ্ছিলো না। পরে অজ্ঞাতনামা এক মহিলার লাশ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। লাশটি দাফন করার পর তাকে ( ছেনোয়ারা বেগম) শনাক্ত করা হয়। এছাড়া লাশ পাবার পর মামলা না করার জন্য হুমকি দেয়া হয় একটি মোবাইল ফোন থেকে।