::; বিশেষ প্রতিনিধি :::
সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো এবারের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়নি। নির্বাচনে অংশ নেননি বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও। নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে ৪৬ শতাংশ ভোট পড়েছে নির্বাচনে।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা মঞ্চে সব কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণার আগেই আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিজয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ে নগর জুড়ে। উপশহর, তালতলা, পাঠানটুলা , মির্জা দাঙ্গালসহ বিভিন্ন এলাকার যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও আওয়ামী লীগের সমর্থকরা বিজয়ের উল্লাসে মেতে ওঠে । কেউ এসেছেন লন্ডন সঙ্গে, কেউবা যুক্তরাষ্ট্র থেকে । সবার চোখে মুখেই ফুটে ওঠেছে সিলেটের প্রতি ভালোবাসা।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী পেয়েছেন ১,১৯, ৯৯১ভোট । লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল ৫০,৮৬২ভোট। সবকটি কেন্দ্রের প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী ৬৯ হাজার ১২৯ ভোটে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলকে ধরাশায়ী করেছেন যুক্তরাজ্যের কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আনোয়ারুজামান চৌধুরী। রাত সোয়া দশটায় উপশহরের শাহজালাল গ্যাসের অডিটোরিয়ামে আসেন তিনি। এর আগে নৌকার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন তিনি।
সিলেটের নতুন নগরপিতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সিলেটবাসীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমার শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা, যিনি যিনি আমার মত একজন নগণ্য রাজনৈতিক কর্মী মাথা স্নেহের হাত বাড়িয়েছেন। কৃতজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের বিভিন্ন শহর থেকে আসা প্রবাসীদের প্রতিও। সবার পরামর্শ নিয়ে আমার প্রতিশ্রুতি মতো সিলেটকে স্মার্ট নগরী হিসেবে গড়ে তুলবো। সিলেটবাসীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারলেই আমার রাজনৈতিক জীবনের স্বার্থকতা বলে ভাববো। ‘
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী বাকি মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা) পেয়েছেন ১২৭৯৮ ভোট, সালাউদ্দিন রিমন (কলম) ২৬৪৮ ভোট, মোশতাক রউফ ( হরিণ) ২৯৫১, আব্দুল হানিফ কুটু ( ঘোড়া) ৪২৯৬, শাহজাহান মিয়া (বাস) ২৯,৬৮৮ ভোট পেয়েছেন।
বিভিন্ন কেন্দ্রে নারী-পুরুষ শান্তিপূর্ণভাবে ভোটের জন্য লাইনে দাঁড়ান সকাল থেকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার সংখ্যা বাড়তে থাকে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে দুপুরের পর ভোট দিতে এসেছেন বেশকিছু ভোটার। এ কারণে নির্ধারিত সময় চারটার মধ্যে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন ঘোষণা করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা মঞ্চে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত সব কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আনার জামান চৌধুরী বিজয়ের খবর। সিলেটের এবারের নির্বাচনে সবটুকু উত্তাপ যেন প্রবাসীদের কিরে। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীও এই বিজয়কে উৎসর্গ করেছেন সারাবিশ্বে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিদের।
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে এবার মেয়র পদে প্রার্থী আটজন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা), জাকের পার্টির প্রার্থী মো. জরিহুল আলম (গোলাপ ফুল)। স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল হানিফ, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মো. শাহ জাহান মিয়া এবং মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।
৪২টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ২৯৪ জন। ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৮৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এখানে ভোটার ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩ জন, মহিলা ভোটার ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন এবং ছয়জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন। ১৯০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে গত ১২ জুন অনুষ্ঠিত বরিশাল ও খুলনা সিটি নির্বাচনে এবং ২৫ মে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি নির্বাচনেও সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট নেওয়া হয়।