28.2 C
Dhaka
Friday, October 3, 2025

পঞ্চগড়ে ভুল চিকিৎসায় গর্ভের যমজ সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ

আরও পড়ুন

::::পঞ্চগড় প্রতিনিধি ::::

পঞ্চগড়ে ভুল চিকিৎসায় গর্ভের যমজ সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় হিউম্যান ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দায়িত্বহীনতা, ভুল রিপোর্ট এবং ভুল চিকিৎসায় এক প্রসুতি মায়ের গর্ভের যমজ সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

গত সোমবার (১৯ জুন) মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তি সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সিভিল সার্জন ডা. রফিকুল হাসান।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ জুন বিকেলে দেবীগঞ্জ উপজেলার ভাউলাগঞ্জ চিস্তাপাড়া এলাকার প্রবাসী বাবলা হোসেনের প্রসূতি স্ত্রী তাসমিন আক্তারকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাওয়া হয় দেবীগঞ্জ হিউম্যান ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। তারা ডা. হাসনাত তানজিলাকে দেখান। ওই চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান প্রসূতির পেটে একটি সন্তান রয়েছে। এ সময় তিনি কিছু ওষুধ এবং এইচপিসি ডিএস (৫০০এমজি) ইনজেকশন ব্যবস্থাপত্রে লিখে দেন। ইনজেকশন কিনে আনার পর তিনি নিজেই তা প্রসূাতির শরীরে পুশ করেন। এরপর প্রসূতি বাড়ি ফিরে গেলে রাতে তার অবস্থার অবনতি হয়। বিষয়টি হাসনাত তানজিলাকে জানানো হলে তিনি বলেন ‘লিখে দেয়া ওষুধ সেবন করলেই সেরে যাবে।’

কিন্তু ওষুধ খাওয়ানোর পর সমস্যা আরো গুরুতর হতে থাকে। পরদিন ওই চিকিৎসককে আবারো ফোন করে বিষয়টি জানালে তিনি উল্টো রোগির স্বজনদের সঙ্গে উগ্র আচরণ করেন।  এদিকে প্রসূতির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলে ১৬ জুন দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জানা যায় তার গর্ভে যমজ সন্তান রয়েছে। পানি স্বল্পতার কারণে তারা মাতৃগর্ভেই মারা গেছে।

এরপর প্রসূতিকে দ্রুত রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পথে অবস্থার আরও অবনতি হলে ডোমার উপজেলা সদরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে অস্ত্রপচার করে ওই প্রসূতির গর্ভ থেকে মৃত যমজ সন্তান দুটি বের করা হয়। এ  ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার হিউম্যান ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দায়িত্বহীনতা ও চিকিৎসকের ভুল রিপোর্ট ও ভুল চিকিৎসাকে দায়ী করেন।

অভিযোগকারী মনির হোসেন বলেন, আমার ভাবীকে ডা. তানজিলা ইনজেকশন পুশ করার পর আমরা বাড়িতে নিয়ে আসার পরপরই সমস্যা শুরু হয়। ওই চিকিৎসক আল্ট্রাসনোগ্রাম করে ভুল রিপোর্ট দিয়েছেন। পেটে যমজ সন্তান থাকলেও তিনি বলেছেন একটি। তিনি যদি ওই সময়ই সঠিক রিপোর্ট দিতেন তাহলে আমরা হয়তো সন্তান দুটি বাঁচাতে পারতাম। আমরা মনে করি এই যমজ সন্তান দুটি মারা যায় নি। ওই ক্লিনিক ও ডাক্তার তাদের হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আমরা ন্যায্য বিচার দাবি করছি।

হিউম্যান ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আব্দুল কাদের বলেন, ওই নারীর যখন আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয় তখন সব ঠিকঠাক ছিল। বাড়িতে যাওয়ার পর কি হয়েছে তা আমরা জানি না। তবে আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে একটি সন্তান আসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক সময় চিকিৎসকদের ভুল হতেও পারে। এ বিষয়ে ডা. হাসনাত তানজিলাকে মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

পঞ্চগড়ের সিভিল সার্জন ডা. রফিকুল হাসান বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের গাইনী কনসালটেন্টকে প্রধান করে তিনি সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে তার আলোকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সবশেষ খবর