সাহসী ওসমান হাদী চেয়েছিল এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক, মানুষ অর্থনৈতিক অধিকার ফিরে পাক: তারেক রহমান

0
61

চিফ রিপোর্টার :

 

ফাসির দন্ডাদেশ প্রাপ্ত ফ্যাসিস্ট হাসিনার জুলুমের শিকার হয়ে নির্বাসিত প্রবাস জীবনের অবসান শেষে নিজ মাতৃভূমিতে ফিরলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দীর্ঘ দেড় যুগ পরে বিমান থেকে নেমে বিমান বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাইরে এসে আবেগ আপ্লুত ও উচ্ছ্বসিত হয়ে যান। খালি পায়ে পরম মমতায় দেশের মাটি স্পর্শ করে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্লানিং যাত্রা শুরু করেন। তার জন্য সংরক্ষিত পূর্ব পরিকল্পিত গাড়িতে না চড়ে, লাল সবুজে রঙিন বুলেট প্রুপ একটি বাসে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে পূর্বাচলে ৩০০ ফিট এলাকায় গণসংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হন।

দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গণসংবর্ধনা মঞ্চে উপস্থিত হতে তার তিন ঘণ্টার বেশী সময় লেগেছে। দেশের লাখ লাখ মানুষের সংবর্ধনা ও ভালোবাসায় শিক্ত হয়েছেন তারেক রহমান। দীর্ঘ পথযাত্রার ক্লান্তির কোনা স্পর্শই দেখা যায়নি তার মধ্যে। বিমানবন্দর থেকে জনসভার মঞ্চ পুরো পথে দেখা গেছে হাস্যোজ্জ্বল ও উচ্ছ্বসিত। উচ্ছসিত জনগনের সাথে নিজের দীর্ঘদিন নির্বাসন জীবনের শেষে দেশে ফেরার আনন্দ ও উচ্ছাসকে ভাগাভাগি করতে তিন ঘন্টার বেশী সময় নেন জনসভা মঞ্চে আসতে। বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে বিএনপির ‍সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদের ঘোষণার পর তারেক রহমান তার বক্তব্য শুরু করেন।এর আগে মঞ্চে উপস্থিত সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য নেতাদের সাথে কোলাকুলিসহ সৌজন্য বিনিময় করেন।

বিছমিল্লাহ রাহমানির রাহীমের মাধ্যমে তার বক্তব্য শুরু করে তারেক রহমান দেশে ফিরতে পাড়ায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে লাখ কোটি শুকরিয়া প্রকাশ করেন। বক্তব্যের শুরুতে তিনি ১৯৭১ সালের পরবর্তী সকল আধিপত্য বিরোধী আন্দোলনে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

 

তিনি বলেন, আজ আমাদের সময় এসেছে সবাই মিলে দেশ গড়ার। আমরা সকলে মিলে এমন একটি দেশ গড়ে তুলব, যেই বাংলাদেশের স্বপ্ন একজন মা দেখেন, একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। আমরা সকলে যদি ঐক্যবদ্ধ হই, লক্ষ-কোটি মানুষের সব প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালে তরুণ প্রজন্মের সদস্যরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য শহিদ হয়েছেন। তাদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার বিকল্প নেই।

 

তারেক রহমান তার বক্তব্যকালে বলেন, কয়েক দিন আগে ২৪ এর আন্দোলনের প্রজন্মের এক সাহসিক ওসমান হাদীকে হত্যা করা হয়েছে, ওসমান হাদী শহিদ হয়েছেন। ওসমান হাদী চেয়েছিল এদেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হোক, অর্থনৈতিক অধিকার ফিরে পাক। ওসমান হাদিসহ সকল শহিদের রক্তরে ঋণ পরিশোধ করতে হলে আমাদের সকলে মিলে কাজ করতে হবে।

 

 

তিনি বলেন, আধিপত্যবাদী গুপ্ত চরেরা এখনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে এখনো ওৎপেতে আছে। আমাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে। যে কোনো মূল্যে আমাদেরকে এ দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। যে কোনো উসকানির মুখে আমাদের শান্ত ও দৃঢ় থাকতে হবে। তিনি তিন বার করে বলেন, আমরা দেশে শান্তি চাই।

 

 

যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবাদবিরোধী নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের ঐতিহাসিক ভাষণের সূত্র টেনে তিনি বলেন, ‘মার্টিন লুথার কিং বলেছিলেন–আই হ্যাভ অ্যাঁ ড্রিম (আমার একটি স্বপ্ন আছে)। তেমনি আজ আমিও বলছি–আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান (আমার একটি পরিকল্পনা আছে)।’

 

 

তারেক রহমান উপস্থিত লাখো জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘দেশ পুনর্গঠনে আমার একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে। এ দেশের সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমি সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব। আর এই লক্ষ্য অর্জনে আপনাদের প্রত্যেককে কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন, আল্লাহর রহমত হলে আমরা আমাদের চেষ্টা শ্রমের মাধ্যমে সকলের সহযোগিতায় আমাদের প্রত্যাশিত এই বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে পারব। তারেক রহমান তার বক্তব্যে আরো বলেন, আমরা নবী করিম স. এর ন্যায়-পরায়ণতার আলোকে দেশ পরিচালনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে তারেক রহমান একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকারও করেন।

এই বাংলা/এমএস

টপিক 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here