নাসির নগর (ব্রাহ্মণ বাড়ীয়া) প্রতিনিধি :
হক্কানি আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ ও আল্লাহর অলিগণ যুগে যুগে নবীদের ওয়ারিশ হিসেবে মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে আহ্বান করেছেন। ইসলামের সঠিক মর্মবাণী প্রচার ও সমাজ সংস্কারে তাঁদের অবদান অনন্য। এমনই এক মহান সুফি সাধক ছিলেন সৈয়দ মিরান শাহ তাঁতারী (রহ.)—যিনি ইসলামের আদর্শকে ছড়িয়ে দিতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
দৈনিক এই বাংলার সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
১৮৩৬ সালে রাশিয়ার তাতারস্তান প্রদেশে এক সম্ভ্রান্ত সৈয়দ পরিবারে তাঁর জন্ম। বংশ পরম্পরায় তিনি গাউসুল আজম হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)–এর উত্তরসূরি ছিলেন। অল্প বয়সেই পিতৃহারা হয়ে মিরান শাহ আত্মিক ও ধর্মীয় চর্চায় গভীর মনোনিবেশ করেন। তাঁর মা আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন যেন পুত্র গাউসুল আজমের দরবারে আত্মনিবেদন করতে পারেন। এরপর থেকেই তাঁর জীবনে আধ্যাত্মিক পরিবর্তন দেখা দেয়।
দ্বীনি শিক্ষার উদ্দেশ্যে তিনি ভারতে আগমন করেন এবং দীর্ঘ ১২ বছর কঠোর সাধনা-সিয়ামে আত্মনিয়োগ করেন। পরে স্বপ্নযোগে গাউসুল আজমের নির্দেশ পেয়ে বাগদাদ শরীফে উপস্থিত হন ও তাঁর কাছ থেকে কাদেরিয়া তরিকার বায়আত ও এজাজত লাভ করেন।
গাউসুল আজমের নির্দেশে সৈয়দ মিরান শাহ তাঁতারী ইসলামের দাওয়াত ও কাদেরিয়া তরিকতের প্রচারের জন্য বাংলায় আগমন করেন। তিনি জীবনের বাকি সময় মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান ও সমাজ সংস্কারে ব্যয় করেন।
১৯২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর (৯ পৌষ ১৩২৮ বাংলা) তিনি কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার বাঙ্গালপাড়ায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর পবিত্র মাজার শরীফ এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার কচুয়া গ্রামে অবস্থিত।
প্রতি বছর ৫ ফাল্গুন তাঁর উরস শরীফে লক্ষাধিক মানুষ সমবেত হন—যেখানে ইসলামি আধ্যাত্মিকতা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে এই মহান সুফি সাধকের স্মরণে আয়োজন করা হয় বিশেষ আনুষ্ঠানিকতা।
এই বাংলা/এমএস
টপিক
