গ্রামের প্রায় ২০০ নারী কাজ করছেন স্থানীয় প্রতিষ্ঠান হালিমা টেলিকমে।
সেই বছরই চীন সফর করে বাটন মোবাইলের যন্ত্রাংশ নিয়ে এসে শুরু করেন মোবাইল তৈরি। প্রথম দিকে কিছু লোকসান হলেও পিছু হটেননি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে পিয়ারাতলীর কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, নারীরা ব্যস্ত যন্ত্রাংশ জোড়া লাগাতে। কেউ এলসিডি, কী-প্যাড, ক্যামেরা বসাচ্ছেন, কেউ বা ব্যাক হাউজিং বা লেন্স সেট করছেন।
কারখানার কর্মী শিউলি আক্তার ও ফারজানা বলেন, “প্রথমে কিছুই জানতাম না। তিন মাসের প্রশিক্ষণে এখন পুরো মোবাইল বানাতে পারি। অনেক সময় বাড়িতেও কাজ করি। গ্রামের অনেক নারী এখন এ কাজ জানে।”
হালিমা টেলিকমের সেলস অ্যাডমিন ওমর হাসান বলেন, “আগে এসব নারীরা কোনো কাজ জানতেন না। এখন নিজেরাই মোবাইল ফোন তৈরি করছেন এবং সংসারের আয় রোজগারে ভূমিকা রাখছেন। আমাদের চেয়ারম্যানের স্বপ্নই ছিল— গ্রামীণ নারীদের প্রযুক্তিতে যুক্ত করা।”
হালিমা হাইটেক পার্কের প্রোডাকশন হেড মিজানুর রহমান জানান, “যন্ত্রাংশগুলো চীন থেকে আসে। ধাপে ধাপে প্রতিটি অংশ একে একে জোড়া লাগানো হয়, পরে পরীক্ষা শেষে প্যাকেটিং করা হয়। এসব মোবাইল দেশের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।”
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবুল কালাম হাসান টগর বলেন, “একসময় হোটেল বয়ের কাজ করতাম, এখন আমার পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১,৪০০ জন কাজ করছেন। তাদের ৯৫ শতাংশই নারী। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা এখন দক্ষ কর্মী হয়ে উঠেছেন। নিজের আয় দিয়ে সংসার চালাচ্ছেন, সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ছেন।”
পিয়ারাতলী এখন কুমিল্লার “মোবাইল তৈরির গ্রাম” নামে পরিচিত। এখানকার নারীরা প্রযুক্তির স্পর্শে বদলে দিয়েছেন নিজের জীবন, আর গ্রামটি হয়ে উঠেছে উন্নয়নের অনুপ্রেরণা।
এই বাংলা/এমএস
টপিক